কোম্পানিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৩
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০ জন।
উপজেলা সদর বসুরহাট বাজারে শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুর রহমান দাবি করেন, এ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কোম্পানিগঞ্জ থানার ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল ইসলামসহ ৫ পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। রাত পৌনে ৯টার দিকে দুইজনের শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে।
এসপি আনিসুর রহমান বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষের সময় জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের গুলিতে কোম্পানিগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলামসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া গোলাগুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু গণমাধ্যমে ৫/৬ জন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ করছে।’ তাদের লাশ দেখে এবং নিদির্ষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করার আহ্বান জানান তিনি। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, বিকেল সোয়া তিনটার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বসুরহাট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সার্ভার স্টেশনের কাছে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন।একপর্যায়েদুই পক্ষই গুলি ছুড়লে পুলিশের দু’জন কনস্টেবলসহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে যায়। আহত হন অন্তত ৪০ জন।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রশিদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, বিকেলে মতিউর রহমান (১৫) ও সাইফুল ইসলাম (২২) নামের দুই যুবককে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। এর পরেই তাদের সঙ্গে আসা লোকজন লাশ দু’টি নিয়ে যান।
এদিকে শিবিরের নোয়াখালী দক্ষিণ জেলা শাখার সভাপতি জিয়াউল হক মুঠোফোনে দাবি করেছেন পুলিশের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের সাতজন কর্মী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের লাশ থানায় রয়েছে। তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া বাকি চারজন হলেন-জামায়াতকর্মী রাসেল (৩২), শিবিরকর্মী সাইফুল ইসলাম (১৯), মতিউর রহমান (১৭), মো. রায়হান (২২)। এ চারটি লাশ দলীয় কর্মীরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে জামায়াত-সমর্থকরা বসুরহাট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে স্কুলটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। একপর্যায়ে বসুরহাট বাজার ও আশপাশের এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জামায়াত-শিবিরকর্মীরা উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিস, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, আনসার-ভিডিপি কার্যালয় ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ সময় ওই সব কার্যালয়ের বেশকিছু আসবাবপত্র ও মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে যায়।
বসুরহাট পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মোশারফ হোসেন অভিযোগ করেন, তারা পুলিশের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশের অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু মিছিল শুরু করার আগেই পুলিশ বিনা উসকানিতে দলীয় কর্মীদের ওপর গুলি চালায়। এতে সাতজন নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/কেজেএন/নূরু/এনডিএস/ডিসেম্বর ১৪,২০১৩)