দ্যা রিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : যুদ্ধাপরাধীদের তাড়াতে বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াবেই। ধর্মকে পুঁজি করে যারা রাজনীতি করে মানুষ জাগলে তারা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না।

শনিবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ জাতীয় কনভেনশনে সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এ কথা বলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, ’৭১-এ সামাজিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক মুক্তির দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এ সময় কিছু রাজাকার এ দাবির পথে বাধা দিয়েছিল। সেই রাজাকাররাই মুক্তিযুদ্ধের পর আবার মাথাচাড়া দেয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে দলই মানুষের অধিকার হরণ করে ভোটের রাজনীতির জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে আসবে, তাদের জনগণ ত্যাগ করবে।

দেশের জনগণকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য তাদের সচেতন হতে হবে। এ জন্য যে দলগুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি, প্রয়োজনে তাদের ত্যাগ করতে হবে।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য জঙ্গি সংগঠন জামায়াত-শিবির দেশজুড়ে নাশকতা চালাচ্ছে। তাই এই জঙ্গি সংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।

জামায়াত-শিবিরের তরুণ কর্মীদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি কিন্তু জামায়াত-শিবিরের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে দল করছেন, আপনারা যুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসুন। অচিরেই আপনাদের দলের প্রতি ভুল ভাঙবে বলে আশা করছি। আপনারা জনগণের কাতারে এসে দাঁড়ান।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট করুন। যদি আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস না করে থাকেন, তাহলে দেশ ত্যাগ করুন।

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, এদেশের মানুষের চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ। জনগণ কোনোভাবেই জামায়াত-শিবিরকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদের সভাপতি রানা দাসগুপ্ত বলেন, ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে। যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াত এদেশকে বাংলাস্তান বানাতে চায়, তাদের স্বপ্ন কোনোদিনই পূরণ হবে না। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, তারা এটা কোনোদিনই হবে দেব না।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪২ বছরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। অন্যদিকে দেশবিরোধী চক্র শক্তিশালী হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ডাক এসেছে দেশবিরোধী শক্তি রুখে দেওয়ার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি আবারো এক হবে, শক্তিশালী হবে।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ নামে সংগঠনের জাতীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে সভাপতি ও সুলতানা কামালকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- সৈয়দ শামসুল হক, কামাল লোহানী, ড. আকবর আলি খান, ডা. সারোয়ার আলী, জিয়াউদ্দিন তারেক, আবেদ খান. রামেন্দু মজুমদার, রানা দাস গুপ্ত ও অধ্যাপক এমএম আকাশ।

উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার বীরউত্তম, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সভাপতি অজয় রায়, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, গার্মেন্ট শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির আয়শা খানম।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রামেন্দু মজুমদার।

(দ্যা রিপোর্ট২৪/শুভ/এএস/জেএম/অক্টোবর ০৫, ২০১৩)