কলকাতা প্রতিনিধি : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ধরা পড়া নির্দোষ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতার না করে সেখান থেকেই মুক্তি দিয়ে দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

বিএসএফের এডিজি (পূর্বাঞ্চল) বংশীধর শর্মা এ প্রসঙ্গে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুই পাড়ে বেশিরভাগ স্থানে জনবসতি খুব কাছাকাছি। ফলে প্রায়ই অনেক মহিলা ও শিশু ভুল করে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসেন। দালালের খপ্পরে পড়েও অনেকে ঢুকে পড়েন ভারতে। তারা কোন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন। বিজিবির সঙ্গে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ করে সঙ্গে সঙ্গেই ওইসব মহিলা ও শিশুকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে বিএসএফ।

ভারত সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তে খুশি পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর। কারণ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলে প্রায় চার হাজার বাংলাদেশি বন্দি রয়েছেন।

কারা দফতর সূত্রের খবর, ইতোমধ্যে ৭০০ বন্দির মুক্তির আদেশ হয়েছে। বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত বন্দি যথাক্রমে ৯০০ এবং ২২০০ জন। তাদের সঙ্গে শিশু রয়েছে অন্তত ২০০।

আইজি (কারা) রণবীর কুমার বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, এ দেশে ঢুকে পড়ার দায়ে যেসব বাংলাদেশি জেল খাটেন, তাদের অধিকাংশেরই অপরাধের নজির নেই। কিন্তু দিনের পর দিন তাদের জেলে থাকতে হচ্ছে।’

এই নিয়ে কয়েক বছর ধরেই দিল্লির কাছে বারবার দরবার করেছে পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর। দিল্লির এই সিদ্ধান্তে এ রাজ্যের জেলগুলোতে বাংলাদেশি বন্দির ভিড় কমবে বলে মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতরের কর্তারা।

এদিকে বিএসএফ সূত্রের খবর, সীমান্তে ধরা পড়া নিরাপরাধ বাংলাদেশিদের নিয়ে দিল্লির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে নতুন নিয়মানুযায়ী, ২১ সেপ্টেম্বর ১৯ জন মহিলা, ২৭ শিশু এবং পাঁচ বাংলাদেশি পুরুষকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

বিএসএফ কর্মকর্তারা জানান, গত মাসে হিলি সীমান্তে ববিতা রায় (২৮), অপর্ণা রায় (৪০) ও নিতু (১১) ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। তাদের সঙ্গে ধরা পড়েন বিধান পাল নামের এক ব্যক্তিও। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ জওয়ানরা জানতে পারেন, বিধান আসলে পাচারকারী। সে ওই দুই মহিলা ও বালিকাটিকে এ দেশে পাচার করছিল। নতুন নিয়মানুযায়ী বিধানকে গ্রেফতার করে- ববিতা, অপর্ণা ও নিতুকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় বিএসএফ।

(দ্য রিপোর্ট/এসএম/জেএম/এমএআর/লতিফ/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)