রাজশাহী সংবাদদাতা : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছীতে জামায়াত-শিবিরের ছোড়া ককটেল বিস্ফোরণে মিম (৯) নামের এক চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী আহত হয়েছেন। আহত মিম উপজেলার হলিদাগাছী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও একই এলাকার মাসুদ রানার মেয়ে।

মিমের বাবা মাসুদ রানা জানায়, উপজেলার হলিদাগাছীতে রবিবার দুপুর ১২টার দিকে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল থেকে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে শিবিরকর্মীরা। তারা সেখানে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে মিমের পায়ে ককটেলের স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এদিকে মহানগরীর সোনাদিঘী মোড়ে আবারও পুলিশের সঙ্গে শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর, রুয়েট সংলগ্ন দেবিসিংপাড়া এবং জিপিও এলাকায় শিবিরকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

হরতালের সমর্থনে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সোনাদিঘী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিবিরকর্মীরা। পুলিশ তাতে বাধা দিলে শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পুলিশের সাজোয়া যান ঘটনাস্থলে এসে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে এইচ এম এরশাদকে আটকের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে নগরীর গণকপাড়া দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করে জাতীয় পার্টি। মিছিলে নেতৃত্বে দেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম স্বপন। মিছিলটি সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, শিবিরকর্মীরা সোনাদিঘীর মোড়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এছাড়া জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মিছিল থেকে নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে তাদেরও ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

একই সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় আবারও মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এর আগে, সকাল ৭টার দিকে শিবিরকর্মীরা বিনোদপুরে হরতালের সমর্থনে রাস্তা অবরোধ করে এবং ককটেলের বিস্ফারণ ঘটায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়লে সংঘর্ষ বেধে যায়। শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বেশ কয়েকটি ককটেল ও পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। শিবিরকর্মীদের দাবি, পুলিশের ছোড়া গুলিতে তাদের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

রাজশাহীর উপ-পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) প্রলয় চিসিম বলেন, হরতালের সমর্থণে শিবিরকর্মীরা বিনোদপুর এলাকায় মিছিল বের করে। তারা সেখানে কাঠেরগুড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে সংঘর্ষ বাধে। এসময় শিবিরকর্মীরা পুলিশের সাজোয়া যান লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ককটেল ও পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে এ ঘটনায় কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি।

সকাল পৌনে ৭টার দিকে রুয়েট সংলগ্ন দেবিসিংপাড়া এলাকায় রাস্তা অবরোধ করলে শিবিরকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানেও শিবিরকর্মীরা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এদিকে মহানগরীতে নাশকতা প্রতিরোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছে বিজিবি। এছাড়া মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। অব্যাহত রয়েছে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের টহল।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচজে/এমএআর/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)