পাটগ্রামে সংঘর্ষে নিহত ৪, ১৪৪ ধারা
লালমনিরহাট সংবাদদাতা : কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে ডাকা হরতালের মধ্যে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে শিবির সভাপতি, যুবলীগকর্মীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে এ ঘটনায় পাটগ্রাম উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। রবিবার দুপুর ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
নিহতরা হলেন- উপজেলার শিবিরের সভাপতি মনিরুল ইসলাম (২৮), শিবিরকর্মী আবদুর রহিম (২৯) ও সাজু ইসলাম (১৮) এবং যুবলীগকর্মী মিন্টু রহমান (২২)। নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাটগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের কাফিরবাজার এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এ সময় তারা রেল লাইনের ফিসপ্লেট খোলার চেষ্টা করে। যাত্রীবাহী ট্রেনে শিবিরকর্মীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা শিবিরের সভাপতি লাভলু ইসলাম ও উপজেলা জামায়াতের আমির আনিসুল ইসলাম জানান, পুলিশের গুলিতে শিবিরের তিন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাতজন শিবিরকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে বেলাল ও রহিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিবিদ্ধরা বর্তমানে পাটগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎিসাধীন রয়েছেন।
শিবির সভাপতি লাভলু জানান, ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজু ইসলাম মারা যান।
এদিকে এ ঘটনার পর উত্তেজিত শিবিরকর্মীরা বাউড়া ও মির্জারকোট এলাকায় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা যুবলীগ কর্মী মিন্টুকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন পাটগ্রাম আওয়ামী সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম নাজু। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১০ জন বলে জানান তিনি।
ওসি সোহরাব হোসেন জানান, এ ঘটনার পর জামায়াত-শিবিরকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের লাবলুসহ দুই সমর্থকের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। তারা সড়কের উপর গাছের গুড়ি ফেলে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা অবরোধ করে করে রেখেছে। নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/টিআই/এসবি/রাসেল/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)