দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আগেই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয় বাড়লো আরেক দফা। যোগাযোগ খাতের আলোচিত এ প্রকল্পে আগের চেয়ে ২৩৭ কোটি বেশি ব্যয় হবে। পিপিপির (সরকারি বেসকারি অংশীদারিত্ব) আওতায় নির্মিতব্য এ প্রকল্পের সংশোধিত চুক্তিতে এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

রবিবার সকালে বনানীর সেতু ভবনের সভাকক্ষে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিপত্রে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট প্রেমচাই কারনাসুতা এবং সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম চুক্তিকে স্বাক্ষর করেন। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।

যোগাযোগমন্ত্রী জানান, ২০ কিমি. দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে আট হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এরমধ্যে সরকার দেবে দুই হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

নথিপত্র থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের চুক্তি অনুযায়ী মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিলো আট হাজার ৭০৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আগেই এ ব্যয় আবার বাড়ানো হলো।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ‘ফাস্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড’ গঠন করা হয়েছে।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত রুট নির্ধারণ করা হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। র‌্যাম্প থাকবে ৩১টি (দৈর্ঘ্য ২৭ কিমি.)।

জানা গেছে, রাজধানীর যানজট নিরসনে ২০০৯ সালে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আট হাজার ৭০৩ কোটি ১২ লাখ টাকার এ প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৭৩ শতাংশ বিনিয়োগকারী ও ২৭ শতাংশ সরকারের বহন করার কথা। এ জন্য থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি চুক্তি হয়। সে বছর ৩০ এপ্রিল প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রতিদিন কমপক্ষে ১৩ হাজার ৫০০ যানবাহন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করবে বলে প্রাথমিক সমীক্ষায় ধরা হয়। পর্যায়ক্রমে এ সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই প্রকল্পের এলাইনমেন্ট ছিল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, সাতরাস্তা, মগবাজার রেল করিডোর, খিলগাঁও, কমলাপুর, গোলাপবাগ, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড। এই প্রস্তাবটি ২০১০ সালের ২৩ আগস্ট মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে তা সংশোধন করা হয়।

২০১১ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

গত ১৮ জুলাই যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন গত আগস্ট মাসে ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র প্রথম ধাপের নির্মাণ কাজ শুরু হবে ।

তিনি আরো জানিয়েছিলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত (৮ কিলোমিটার) প্রথম ধাপের কাজটিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিমান বন্দর থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এবং মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার।

দ্বিতীয় ধাপে তেজগাঁও থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে কমলাপুর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত (৭ কিলোমিটার) নির্মাণ করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/ নূরু/এমডি/ ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)