হরতাল-অবরোধে রাবিতে সেশনজট
রাবি প্রতিনিধি : বিরোধী জোটের হরতাল ও অবরোধের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কোনো বিভাগেই ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে গত কয়েক মাসে রাবির একাধিক বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা দফায় দফায় পেছানোর পরও পরীক্ষা নিতে পারেনি বিভাগগুলো।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা কয়েক দফা পেছানোর পরও এখন পর্যন্ত তা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান, চারুকলা, আরবী, ভাষা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং বাংলা বিভাগ, প্রকৌশল, বিজ্ঞান, কৃষি, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে অন্তত ২২টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের কবলে পড়েছেন।
হরতাল ও অবরোধসহ বিভিন্ন কারণে গত দুই মাসে রাবিতে ২০দিনের বেশি কোনো বিভাগই ক্লাস নিতে পারেনি। এছাড়া শিক্ষাবর্ষের শেষের দিক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ ছাড়া প্রায় প্রতিটি বিভাগই নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিতে পারেনি। গত এক সপ্তাহে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তত ৮টি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষার সময়সূচি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
রাবির দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয় ২২ নভেম্বর। ওই পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি শেষ হওয়া কথা থাকলেও তা আর হয়ে উঠবে না বলে জানান বিভাগের সভাপতি। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ওই বর্ষের পরীক্ষা শুরু হলেও প্রথম পরীক্ষা নেওয়ার এক মাস পার হলেও দ্বিতীয় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে বিভাগটি ওই বর্ষসহ সকল বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
এভাবে রাবির একাধিক বিভাগ তাদের পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২৮ হাজার শিক্ষার্থী।
হরতাল ও অবরোধের কারণে রাবির প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা নিয়েও সমস্যায় পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তি পরীক্ষার প্রথম সময়সূচি দেওয়া হয় ১০ থেকে ১৪ নভেম্বর। ওই সময় হরতাল দেওয়ায় তা পরিবর্তন করে ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। পুনঃনির্ধারিত সময়ে আবারও অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ায় ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়ে ২৫ থেকে ২৮ ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু তাও পরিবর্তন করে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর করেছে প্রশাসন। ওই সময়ে পরীক্ষা হওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের এই অবস্থায় যেখানে নিজের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই সেখানে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো বিভাগের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে নতুন সেশন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এবার তা আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই রাবির জন্য সেশনজট নিশ্চিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সরওয়ার জাহান সজল জানান, সারা দেশেই যেহেতু একই অবস্থা তাই এতে আমাদের কিছুই করার নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া।
(দ্য রিপোর্ট/এমএএ/নূরু/এমএআর/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)