বাগেরহাটে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ৫
বাগেরহাট সংবাদদাতা :বাগেরহাটে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে ওসিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। রবিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেওয়ানবাটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্র শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। এতে বাগেরহাট সদর থানার ওসিসহ পুলিশের অন্তত পাঁচ সদস্য আহত হন।
হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্র ও ইটের আঘাতে আহতরা হলেন বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লিয়াকত হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল হামিদ (৪৭), ভিক্টর (২২), তানজির (২০) ও ওজিয়র (৩৭)। আহত চার পুলিশ কনস্টেবলকে রাত পৌনে নয়টার দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ৫৩ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জামায়াত ইসলামী পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পুলিশের গুলিতে তাদের ৫ কর্মী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তারা আহতদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোল্যা নিজামুল হক রাতে এই প্রতিবেদককে জানান, মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে জামায়াত ইসলামীর নেতারা গোপন বৈঠক করে নাশকতার পরিকল্পনা করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সাড়ে সাতটার দিকে একদল পুলিশ ঐ বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ির পার্শ্ববর্তী খান জাহান আলী ট্রাস্ট পরিচালিত খান জাহান আলী আদর্শ আলিম মাদ্রাসা থেকে ‘গ্রামে ডাকাত পড়েছে’ বলে মাইকিং করা হলে আশেপাশের বাড়ি থেকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
খবর পেয়ে বাগেরহাট পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
তিনি জানান, হামলাকারীদের প্রতিহত করতে পুলিশ ৪০ রাউন্ড শটগানের গুলি, ৯ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের এবং ৪ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ছোড়ে।
খান জাহান আলী আদর্শ আলিম মাদ্রাসার সভাপতি মুহিতুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার পাশের খান জাহান আলী ট্রাস্ট পরিচালিত মসজিদ থেকে মাইকিং করে জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের জড়ো করা হয়। পরে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়।
বাগেরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ রাতে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, পুলিশ কোন কারণ ছাড়াই মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে আসবাবপত্র, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় রাহাত বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশের হামলায় দলের ৫ কর্মী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটে যায়। পুলিশ খান জাহান আলী আদর্শ আলিম মাদ্রাসায়ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এপি/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)