রংপুর সংবাদদাতা : নগরীর জাহাজকোম্পানী মোড়ে জাতীয় পার্টির দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দুপুরে এ সংঘর্ষের সময় পুলিশ সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে দলের চেয়ার‌ম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুক্তির দাবিতে বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে স্থানীয় জাপা।

এক গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী নিজেকে রংপুর জাপার সদস্য সচিব পরিচয় দিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, এরশাদের মুক্তির দাবিতে তার নেতৃত্বে মিছিলটি জাহাজকোম্পানী মোড়ে পৌঁছায়। এ সময় রওশন এরশাদ সমর্থিত মসিউর রহমান রাঙ্গার সমর্থক ও পুলিশ তাদের মিছিলে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করে। এতে ৪৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

তিনি জানান, এরশাদের মুক্তির দাবিতে বুধবার ভোর ছয়টা থেকে শুক্রবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত রংপুরে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হয়েছে।

অপর গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর জেলা জাপার সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। এ সময় মিছিলটি জাহাজকোম্পানী মোড়ে পৌঁছালে মোস্তফার সমর্থক ও পুলিশ হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের গুলিতে মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর সাইফুল ইসলাম আহত হয়েছেন। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোস্তফা পালিয়ে যায়।

তিনি জানান, এরশাদের মুক্তি এবং দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগে হরতাল ডাকা হয়েছে।

রাঙ্গা বলেন, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জাপার বহিস্কৃত নেতা। চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপস্থিতিতে রংপুর জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনি সভাপতি এবং আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

রংপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ শাহাবুদ্দিন খলিফা জাপার দু’গ্রুপের সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করে বলেন, দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নিয়ে লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

তিনি বলেন, পুলিশ কারোর পক্ষে অবস্থান না নিয়ে নাগরিকের নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। নইলে বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে মহানগরীর কলেজ রোডের খামার মোড় হতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলীয় কার্যালয় থেকে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বের হয়। দু’গ্রুপের মিছিলটি জাহাজকোম্পানী মোড়ে পৌঁছালে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এসবি/ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩)