আমজাদ হোসেন, দ্য রিপোর্ট : দেশে কার্যরত ব্যাংকসমূহের নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেওয়ার দুই দিন পরও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মতিঝিলের ব্যাংক পাড়া ঘুরে দেখা যায়, অন্য অবরোধের দিনের মতো মঙ্গলবারও ব্যাংকগুলোর প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। কোথাও পুলিশি নিরাপত্তা চোখে পড়েনি।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক আবদুর রব মিয়া দ্য রিপোর্টকে বলেন, পুলিশি নিরাপত্তার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী দ্বারা ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল কাফি বলেন, পুলিশি নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই।আমরা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন দিকনির্দেশনা পাইনি।

নিরাপত্তার বিষয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দিলকুশা শাখার ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির বিষয়ে শুনেছি। তবে পুলিশের তরফ থেকে আমাদের সাথে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মূখপাত্র মাহফুজুর রহমান দেশের বাইরে থাকায় চিঠির বিষয়ে সহকারী মূখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘নিরাপত্তা চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। এখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে পুলিশ। আপনি পুলিশ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেন।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি(মিডিয়া) মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।

কবে নাগাদ ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে এ প্রশ্নের জবাবে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে কোন

দিকনির্দেশনা আসেনি। আপনি পুলিশ হেড-কোয়ার্টারের সাথে যোগাযোগ করেন।’

পুলিশি নিরাপত্তার বিষয়ে একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশে প্রায় ৫ হাজারের উপরে ব্যাংকের শাখা রয়েছে। সব শাখার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য লাগবে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক লোক দেখানো এই চিঠি দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিভিন্ন ব্যাংকে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে উদ্ধেগ জানিয়ে ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফ থেকে পুলিশ মহাপরিদর্শক আইজিপিকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিরাজমান অস্থিরতা ও নাশকতার ফলে দেশে কার্যরত ব্যাংকসমূহে বিভিন্ন ধরনের হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা ব্যাংকসমূহের নিরাপত্তার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের সহিংসতা একদিকে সাধারণ গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা প্রদানে বাধা সৃষ্টি করছে, অপরদিকে ব্যাংক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বিশেষ উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। ব্যাংকের স্থাপনা সুরক্ষাসহ ব্যাংকসমূহের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, দেশে কার্যরত ব্যাংকসমূহের প্রধান কার্যালয় ও শাখার সুরক্ষাসহ ব্যাংকিং কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করাসহ বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ হতে পুলিশের মহা পরিদর্শককে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/নূরু/এইচকে/ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩)