‘অনেকেই চেঁচামেচি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন’
শনিবার সকাল সাড়ে এগারটায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্র উদ্বোধন ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা চেঁচামেচি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, তাদেরকে বলছি, সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি হবে না। সুন্দরবনের ক্ষতি করে শেখ হাসিনাও কোনও কিছু করবে না’।
তিনি বলেন, ‘সব ধরনের পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনায় নিয়েই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে’।
উল্লেখ্য, সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে বলে তাদের আশংকা।
এছাড়া, বামদল সমর্থিত তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটিও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র না করার আহবান জানিয়ে লংমার্চ করেছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে।
ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যৌথ উদ্যোগে নির্মিতব্য রামপাল কেন্দ্রের সাফল্য কামনা করেন। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় পরিবেশের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানান।
মনমোহন বলেন, ‘সুন্দরবনের যেন ক্ষতি না হয়। এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ’।
তিনি দুটি দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আজকের এই ঘটনা দু’দেশের আন্তঃসংযোগের জন্য মাইলফলক’।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তার দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনায় অংশীদার থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, ‘দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নের জন্য আমরা একসাথে কাজ করতে পারি’। তিনি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য ভারত, নেপাল ও ভুটানকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানান।
রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার ভারতের সাথে সমঝোতা স্মারকের পর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কেন্দ্রটির মালিকানায় রয়েছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি। দেশ দুটি এর সমান অংশীদার।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ২২ অক্টোবর রামপালে এই প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করা হবে। কিন্তু মনমোহন সিং ওইদিন উপস্থিত থাকতে পারবেন না জানালে শনিবারই এই কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
(দি রিপোর্ট২৪/কুষ্টিয়া/এমএআর/জেএম/অক্টোবর ০৫, ২০১৩)