আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ১৮ ডিসেম্বর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘অভিবাসীর অবদান, সমুন্নত দেশের মান’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও পালিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। দিনটি বিশ্বের সকল অভিবাসী কর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিবাসীদের স্বীকৃতিস্বরূপ ও তাদের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারো পালিত হচ্ছে এ দিবসটি।
১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর অভিবাসীরা তাদের পরিবার-পরিজনদের নিরাপত্তা রক্ষায় এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সম্মেলনে জাতিসংঘ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সনদ অনুমোদন করে। পরে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন, মাইগ্রেন্ট রাইটস ইন্টারন্যাশনাল সহ অনেক মানবাধিকার সংগঠন অভিবাসীদের সুরক্ষায় প্রচারণা চালায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘ দিবসটি পালনের ঘোষণা দেয়।
প্রতিনিয়ত বিশ্বে অভিবাসনের হার বেড়েই চলেছে। এক দশকে অভিবাসীর সংখ্যা ১৫০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ মিলিয়ন। বর্তমানে প্রতি ৩৩ জনে একজন অভিবাসী। এদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ অভিবাসীই নারী। আর প্রতি বছর অভিবাসীরা বিশ্বের অর্থনীতিতে যোগ করছেন প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা ৮৫-৯০ লাখ।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি কর্মীরা কর্মক্ষমতা, কাজের প্রতি আন্তরিকতা, কৌশল, বুদ্ধিমত্তার কারণে বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। আমরা পরিচিতি লাভ করেছি নতুন কর্মক্ষেত্রের জোগানদাতা দেশ হিসেবে। দেশে জনসংখ্যার চাপ আছে বলে এ অভিবাসীর সংখ্যা আরো বাড়বে। মজবুত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। বর্তমানে দেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ। এছাড়া রেমিটেন্স এখন সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়েোগের ১৩ গুণ ও বৈদেশিক সাহায্যের ৬ গুণ।
যাদের রেমিটেন্সে ঘুরছে ভাগ্যের চাকা, অর্থনৈতিকভাবে মজবুত হচ্ছে দেশ, তারা এখনো অবহেলার পাত্র। নানা কারণে প্রবাসীরা দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দূতাবাসের সহায়তা থেকেও অনেক সময় বঞ্চিত হন তারা।
এ খাতের উন্নয়নে সরকারি প্রণোদনা, নগদ সহায়তা কিংবা ভর্তুকির ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি। সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হওয়া, বিদেশে যাওয়া ও দেশে ফেরার পথের তিক্তকর অভিজ্ঞতা এসব থেকে বের হয়ে আসুক আমাদের প্রবাসীরা। এবারের আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস তাই হতে পারে তাদের প্রতি কার্যকর কৃতজ্ঞতা স্বীকারের উপলক্ষ।
এ দিবসকে কেন্দ্র করে বুধবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সকাল আটটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শেষ হবে আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।
সকাল ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রবাসীরা বক্তব্য রাখবেন। সন্ধ্যা সাতটায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বিদেশগামী ও বিদেশ প্রত্যাগত বাংলাদেশি কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিবাসন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এমএইচও/কেএম/নূরু/ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩)