শিক্ষা-সংকট, সমাধান জরুরি
দেশের ১৫টি পাবলিক ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছ। অবরোধ-হরতালের কারণে দফায় দফায় পিছিয়ে জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষা ছুটির দিনগুলোতে সম্পন্ন করা হয়েছে। আর বছরের বড় অংশ জুড়ে হরতাল-অবরোধ থাকায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষা কাযর্ক্রম প্রায় ধারাবাহিকভাবে ব্যাহত হয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কারণ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষা ১৫ দিন এগিয়ে আনতে বাধ্য করেছে। ফলে, প্রথম থেকে শুরু করে দশম শ্রেণী পযর্ন্ত সকল শিক্ষার্থীই কমপক্ষে ১৫ দিন কম পাঠ-গ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এ বছর আমাদের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি বিপযর্য়ের শিকার হয়েছে। কোনোমতে পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও উচ্চতর শিক্ষার জন্য কলেজ-ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পড়েছে নতুন সংকটের মধ্যে। এছাড়া ভার্সিটিগুলোতেও এই সময়ে ছাত্ররা ক্লাস থেকে যেমন বঞ্চিত হয়েছে তেমনই বঞ্চিত হয়েছে সময়মত পরীক্ষা দেওয়া থেকে। সবকিছু মিলিয়ে বলা চলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এ বছর চরম বিপযর্য়ের শিকার হয়েছে।
চলমান সংকট মীমাংসার কোনো লক্ষণ যেহেতু আপাতত অনুপস্থিত, সেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন বছরের শিক্ষা কার্যক্রম ঠিকভাবে এগোবে এমন লক্ষণও মিলছে না।
রাজনৈতিক সংকট যেভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর চেপে বসেছে তাতে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই পড়তে হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী এক বিপযর্য়ের মুখে। যতটুকু লোকসান হয়েছে অবস্থার উন্নতি ঘটলে হয়ত পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু সংকট মীমাংসা না হলে শেষ পযর্ন্ত কত শিক্ষার্থী যে ঝরে পড়বে তার হিসাব মিলবে না। তবে, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীরা। প্রাইভেট শিক্ষক বা কোচিং সেন্টারগুলোতে সামর্থবান পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েরা তাদের লেখাপড়ার ক্ষতি আংশিক পুষিয়ে নিতে পারলেও স্বল্প আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের কাছে তা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই বলা যায়, শেষ পযর্ন্ত বিপযর্স্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা। শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃষ্ট এই সংকটের সুষ্ঠু সমাধান অতি জরুরি।