বিশ্বকাপ ট্রফির সফরনামা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আগে এমনটা ছিল না। বিশ্বকাপ ট্রফি রাখা হতো যেখানে; থাকত সাধারণতঃ সেখানেই। বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি নিয়ে এদেশ-ওদেশ ঘুরাচক্র শুরু ২০০৬ সাল থেকে। সেই থেকেই ভ্রমণ করে বেড়াচ্ছে বিশ্বকাপ ট্রফি। তারই ধারাবাহিতকায় এবার প্রথম বাংলাদেশে এসেছে ট্রফি। নিখাঁদ স্বর্ণের তৈরি আসল ফুটবল ট্রফি দেখার সুযোগ কিন্তু সীমিত। ৪ বছর পর পর অনুষ্ঠেয় ফিফা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল তা ছুঁয়ে দেখতে পারে। অবিশ্বাস্য সেই সুযোগ এনে দিয়েছে বিশ্বকাপ ট্রফির স্পন্সর কোকাকোলা। লাখ লাখ ফুটবলভক্ত ফুটবলারদের মতোই ট্রফির আস্বাদন গ্রহণ করছে।
বিশ্বকাপ ফুটবল ট্রফি এবারের পরিভ্রমণ ৯০টি দেশে। এই প্রক্রিয়া চলবে প্রায় ৯ মাস। এবারের পরিভ্রমণের সাক্ষী হচ্ছে বাংলাদেশও। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও কোকাকোলা (বাংলাদেশ) ঘাম ঝরানো চেষ্টায় স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। বিশ্বকাপ ট্রফি ৩ দিন থাকছে ঢাকায়। শেষ ২দিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রাখার কথা ছিল ট্রফিটি। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে তা এখন হোটেল র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনেই শোভা পাচ্ছে। সেখানে ভক্তরা সুযোগ পাচ্ছেন ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলে ইতিহাস হয়ে যাওয়ার।
মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট থেকে বঙ্গভবন ও গণভবন হয়ে ট্রফিটি উঠেছিল হোটেল র্যাডিসনেই। ওই দিন রাতে ট্রফির পর্দা উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ট্রফি ট্যুরের সূচনা করেছেন কোকাকোলার ভারত ও দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার ডেপুটি বিজনেস ইউনিট প্রেসিডেন্ট ভেঙ্কেটেশ কিনি ও বাফুফের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম মুর্শেদী। অনুষ্ঠানে ভেঙ্কটেশ কিনি বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে পছন্দের পানীয় কোকাকোলা তার ভক্তদের জন্য এমন দুর্লভ মুহূর্ত নিয়ে এসেছে; যা জীবনে শুধু একবারই পাওয়া যায়। আমরা খুবই আনন্দিত ট্রফির বিশ্ব পরিভ্রমণে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি। বিশ্ব ফুটবলের এই ট্রফি শুধু সোনার মুকুট নয়, বরং এটা হচ্ছে আনন্দ, আশা, সবার অংশগ্রহণ, বহুমাত্রিকতা, সহযোগিতা এবং সামগ্রিক দায়বদ্ধতারও প্রতীক।
২ মাস কোকাকোলা আন্ডার দি ক্রাউন নামে এক বিশেষ প্রচার চালিয়েছে। এই প্রচারের অংশ হিসেবে যেসব ভোক্তা কোকাকোলার বিশেষ বোতল কিনেছেন; তাদের মধ্য থেকে ভাগ্যবানরা পেয়েছেন বিশ্বকাপ ফুটবল ট্রফি সরাসরি দেখার সুযোগ। কোকাকোলা একটি বিশেষ গানের প্রতিযোগিতাও করেছে এই ট্রফি ট্যুর উপলক্ষে। এই প্রতিযোগিতা ছিল আসছে বিশ্বকাপের যে থিম সং বা প্রতিপাদ্য সঙ্গীত তার বাংলায় রূপায়ন। বিশ্বকাপ ফুটবলের বিশ্বটা আমাদের এই গানের বাংলা রূপায়নের প্রতিযোগিতার কাজ করেছেন মিউজিক কম্পোজার ফুয়াদ আল মুক্তাদির এবং রেডিও ফূর্তি। এখান থেকেই চূড়ান্ত হবে, কোন বাংলা ব্যান্ড বিশ্বকাপের থিম সং বাংলায় গাইবে।
এক নজরে বিশ্বকাপ ফুটবল ট্রফি
তৈরির সময় : ১৯৭৩ সাল
ওজন : ৬১৭৫ গ্রাম (এর মধ্যে ৪৯২৭ গ্রাম খাঁটি সোনা)
উচ্চতা : ৩৬.৫ সেন্টিমিটার
ব্যাস : ১২.৫ সেন্টিমিটার
সবচেয়ে চওড়া অংশ : ১৫ সেন্টিমিটার
উপাদান : সোনা, নিচের অংশটুকু ম্যালাসাইট স্টোনের দুটি রিং দিয়ে সাজানো
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বের্তনি জিডিই এসরল, মিলান, ইতালি
নকশা : সিলভিও গাজ্জানিংগা, ইতালি
(ট্রফি সংক্রান্ত তথ্য ফিফা থেকে প্রাপ্ত)
(দ্য রিপোর্ট/ওআইসি/এএস/সিজি/ লতিফ/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩