সুস্থ জীবনের জন্য মেডিটেশন
মেডিটেশন শুধু মনকেই কেন্দ্রীভূত করে জাগিয়ে তোলে না, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেরও সক্রিয়তা বাড়ায়। মানুষের শক্তির উৎস মন। মন যখন শান্ত থাকে, মানুষ তখন তার মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে। শত শত বছর ধরে মনকে স্থির করার সফলতম পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে মেডিটেশন।
মেডিটেশনের পরিবেশ
সকালে বারান্দার হালকা রোদে হতে পারে মেডিটেশন। মেডিটেশনের জন্য উপযোগী হতে পারে ছাদ কিংবা বড় ঘর। কোলাহল থেকে মুক্ত হতে হবে ধ্যানের স্থান। হালকা আলো আছে এমন ঘর মেডিটেশনের জন্য উপযুক্ত। ঘরে সুগন্ধ ছড়ানো যেতে পারে। মিউজিক প্লেয়ারে বাজতে পারে মিষ্টি কোনো সুর। সেতার, বেহালা কিংবা শিশিরের শব্দের আওয়াজের আয়োজনও থাকতে পারে কৃত্রিমভাবে। ধ্যানে বসার স্থানটি খুব শক্ত হবে না, আবার খুব নরমও যেন না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।
কীভাবে করবেন মেডিটেশন
ধ্যান বা মেডিটেশন করতে হবে পদ্মাসন, সুখাসন, অর্ধপদ্মাসন, স্বস্তিকা আসনে বসে। দুই হাত থাকবে ধ্যান মুদ্রায়। কোমর, কাঁধ, মাথা একটি সরলরেখায় থাকবে। শিথিল করে রাখতে হবে কাঁধ। এই ভঙ্গিতে বসে কিছুক্ষণ অন্য সব চিন্তা দূরে সরিয়ে মনকে কেন্দ্রীভূত করুন। দুর্বল, অসুস্থ শরীর মেডিটেশনের জন্য উপযোগী নয়। তাই সুস্থ হতে হবে আগে। বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে মেডিটেশনে না বসাই ভালো। সৎ চিন্তায় মনকে বাঁধতে হবে। বাদ দিতে হবে অতিরিক্ত ভোজন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম পরিহার করতে হবে। মেডিটেশনের পোশাক-আশাক সুতির আরামদায়ক যেকোনো পোশাকই মেডিটেশনের জন্য উপযোগী। পরিষ্কার পাজামা-পাঞ্জাবি পরে করতে পারেন মেডিটেশন। ট্রাউজার অথবা ট্র্যাকসুটও চলবে। এ ছাড়া যেকোনো ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করতে পারেন। শরীরে যেকোনো ধরনের অলংকার না রাখাই ভালো।
মেডিটেশনের কার্যকারিতা
মনের একাগ্রতা বাড়ে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। দেহের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। মনের উদ্বিগ্ন, হতাশা, অশান্তি দূর করে। অনিদ্রা থেকেও মুক্তি পেতে সক্ষম। দেহতন্ত্রের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুন্দরভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। দীর্ঘায়ু লাভ হয়। মনোকষ্ট দূর করে। চিন্তাশক্তির প্রখরতা বাড়ে। মানসিক চাপ কমায়। আবেগ, অভিমান, হীনম্মন্যতা দূর করে। হৃদেরাগেরও উপশম হয় মেডিটেশনে। মেডিটেশনে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ে।
(দিরিপোর্ট২৪/এমডি/জেএম/অক্টোবর ০৫, ২০১৩)