দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়েকে নিউইয়র্কে গ্রেফতার ও হেনস্থার বিষয়টি ‘দুঃখজনক’ বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বুধবার তিনি এ কথা জানান।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ এক বিবৃতিতে, দেবযানীকে মুক্ত করার ও তার মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। দেবযানীর সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া তার দায়িত্ব বলেও জানান খুরশিদ।

এর আগে, দেবযানীকে গ্রেফতার ও হেনস্থার প্রতিবাদে দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভার এক অধিবেশনে বুধবার বিরোধীদলীয় সাংসদরা সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এসময় বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি বলেন, দেবযানীর গ্রেফতার ভিয়েনা কনভেনশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

বহুজন সমাজ পার্টির নেতা মায়াবতী এ ব্যাপারে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন কোনো মার্কিন নাগরিক আসে, তখন তাদের আমরা আন্তরিকভাবেই গ্রহণ করি। আমাদের এ ব্যাপারে ফের ভাবা উচিত।’

এসময় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের মন্ত্রী আনন্দ শর্মা সরকারের তরফ থেকে বলেন, এই গ্রেফতার জাতির জন্য চরম অবমাননাকর একটি বিষয়। সরকার বিষয়টি খু্বই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

গ্রেফতারের পর তার সঙ্গে ভয়ঙ্কর অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়। বিবস্ত্র অবস্থায় তার দেহে তল্লাশি চালানো হয়। তার ডিএনএ’র নমুনা নেওয়া হয়। পরে তাকে মাদকাসক্তদের সঙ্গে একই সেলে রাখা হয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভারত দেশটিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল করেছে। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সামনের নিরাপত্তা বেষ্টনী সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন কূটনীতিকদের বিশেষায়িত সুবিধাগুলো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভারতের মার্কিন কনস্যুলেটগুলোর কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পরিচয়পত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। তাদের বিমানে ভারত ত্যাগের সুবিধাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের জন্য আমদানি ছাড়পত্রও প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত।

এদিকে দেবযানী গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়ায় একটি মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে রাহুল গান্ধী ও নরেন্দ্র মোদিসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা।

তবে যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি এটা ভারতের জন্য স্পর্শকাতর বিষয়। এই বিচ্ছিন্ন ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার শ্রদ্ধাশীল সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

ওই গ্রেফতারের ঘটনায় সবকিছু নিয়মানুযায়ী হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চায়নি। গত সপ্তাহে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে দেবযানীকে গ্রেফতারের পরের পরিস্থিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি সমাঝোতার চেষ্টা হিসেবে দেবযানীর মামলাটি ফোজদারি থেকে দেওয়ানি আদালতে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন। সূত্র : এনডিটিভি

(দ্য রিপোর্ট/কেএন/এইচএসএম/নূরু/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩)