এমআর সুমন, লক্ষ্মীপুর : আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে গত ছয়দিনে লক্ষ্মীপুরে নয়জন নিহত হয়েছেন। বন্দুকযুদ্ধ ও সংঘর্ষে এসব নিহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এসব ঘটনায় র‌্যাবকে দায়ী করা হয়েছে। অপরদিকে র‌্যাব একটি ঘটনায় ‘আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি’ ছোঁড়ার কথা বললেও অন্যান্য ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর র‌্যাব-১১ এর কর্মকর্তা সাহেদ হাসান বলেন, অভিযানের সময় র‌্যাবকে লক্ষ্য করে বাবুল বাহিনীর প্রধান আসাদু্জ্জামান বাবুল গুলি ছুঁড়লে র‌্যাব আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। এতে বাবুল নিহত হয়। এ ছাড়া অন্য কাউকে র‌্যাব গুলি করেনি।

১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভোররাতে লক্ষ্মীপুরে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু গুলিবিদ্ধ হন। চক মসজিদের সামনে ওইদিন ভোরে জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তবে জুয়েলের মৃতদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।

এসব ঘটনার পর ওইদিন র‌্যাবের সঙ্গে দফায় দফায় ১৮ দল সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে র‌্যাব। বিকেল ৩টায় অবরুদ্ধ র‌্যাবকে উদ্ধারের জন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে আসা হয়। উদ্ধার করা হয় র‌্যাব সদস্যদের।

সংঘর্ষের সময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় জনতার গণপিটুনিতে অজ্ঞাত একজনের মৃত্যু হয়। অন্য নিহতরা হলেন- মাহবুব (৪০), সুমন (৩০) ও শিহাব (২০)।

১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার মধ্যরাতে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমেদ নিহত হন। নিহতের ছেলে বেলাল আহমেদ দাবি করেন- শুক্রবার রাত আনুমানিক একটার দিকে র‌্যাব ফয়েজ আহমেদের বাসায় অভিযান পরিচালনা করে। তাকে বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

১৫ ডিসেম্বর রবিবার মধ্যরাতে আসাদুজ্জামান বাবুল নিহত হয়। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব বাবুল বাহিনীর উপর গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে বাবুল ও তার সহযোগী খোরশেদ আলম নিহত হয়। বাবুল একাধিক হত্যা মামলার আসামি।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেন জানান, ওইদিন রাতে র‌্যাব জামিরতলী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবুল ও তার সহযোগীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে বাবুল ও তার সহযোগী ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে বাবুল বাহিনীর দুই সদস্যের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ বটতলী এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের পাশের খাল পাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরা হলেন- আব্দুল মান্নান (৩০) ও খোরশেদ আলম সুমন (২৫) ।

ওসি মো. ইকবাল হোসেন জানান, নিহত দুজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমআরএস/এপি/এসবি/এমডি/লতিফ/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩)