দর বাড়ার দৌড়ে অনুৎপাদনশীল কোম্পানি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উৎপাদনে না থাকলেও কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে হু-হু করে। ভবিষ্যতে অনেক কোম্পানির উৎপাদনে আসার সম্ভাবনা না থাকলেও শেয়ার দরে উল্লম্ফন থেমে নেই।
অস্বাভাবিকহারে শেয়ার দর বৃদ্ধি পাওয়া এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- রহিমা ফুড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি, মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং।
সিভিও পেট্রোকেমিকেল রিফাইনারি : উৎপাদনে আসবে এমন খবরে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এ শেয়ার বুধবার সর্বশেষ ৮৮১ টাকায় লেনদেন হয়। কোম্পানিটি উৎপাদনে নেই এবং নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদনে আসার পথে অনেক বাধা বিপত্তি থাকায় দর বাড়ার কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ শেয়ারের লেনদেন স্থগিত রাখা হয়। এছাড়া বিগত ছয় মাস বা তারও অধিক সময় উৎপাদনে না থাকায় এ কোম্পানিকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানির চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অফিস এক্সিকিউটিভ মি. হাসান ফোন রিসিভ করেন। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘কোম্পানিটি উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখন কাঁচামালের অনুমোদন পাওয়া গেলে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ আগস্ট এ কোম্পানির চেয়ারম্যান মি. শামীম জানিয়েছিলেন, কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষে পরবর্তী ২০-২২ দিনের মধ্যে কোম্পানি উৎপাদনে আসবে।
রহিমা ফুড : এ কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার বুধবার সর্বশেষ ৮২.৮ টাকায় লেনদেন হয়।
রহিমা ফুডের উৎপাদনও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। অথচ দিনের পর দিন শেয়ারটি সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হচ্ছে। অধিকাংশ কার্যদিবস শেয়ারটি বিক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ছে। অস্বাভাবিকহারে শেয়ার দর বাড়ার কারণে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কয়েক দফায় এ কোম্পানির লেনদেন বন্ধ করে দেয়।
এর আগে গত ৯ অক্টোবর ডিএসইর পক্ষ থেকে রহিমা ফুডের কারখানা পরিদর্শন করা হয়। এ সময় ডিএসইর পরিদর্শক দল দেখতে পান এ কোম্পানির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ এবং এর পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১১ কোটি ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ১৩৬ টাকা। বিগত ছয় মাস কিংবা তারও অধিক সময় উৎপাদনে না থাকায় বুধবার রহিমা ফুডকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয় ডিএসই।
এছাড়া নিরীক্ষক শাহ আলম মনসুর অ্যান্ড কোং সম্প্রতি রহিমা ফুডের অস্তিত্বে বিভিন্ন হুমকির কথা জানায়। পরবর্তীতে তা ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
কোম্পানির ফাইন্যান্স অফিসার সহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া উৎপাদনে আসার মতো কোন অবস্থাও নাই। তবে কোম্পানি উৎপাদনে আসতে পারবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কোম্পানি বিক্রি হয়ে গেছে বা যাচ্ছে এমন গুজব ভিত্তিহীন বলে তিনি জানান।
মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং : বর্তমানে এ কোম্পানির উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এবং নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদনে ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই। তারপরও ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এ শেয়ার বুধবার সর্বশেষ ৯০.২ টাকায় লেনদেন হয়।
কোম্পানি সচিব বি কে নিয়োগী এ বিষয়ে বলেন, ‘ ২০১০ সাল থেকে মডার্ন ডাইংয়ের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদনে আসার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বর্তমানে কোম্পানির বিভিন্ন ভবন ভাড়া দিয়ে যে আয় হচ্ছে তা থেকে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে।’
(দ্য রিপোর্ট/আরএ/শাহ/এইচকে/ডিসম্বের ১৯, ২০১৩)