কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা : জেলার চিলমারীতে হতদরিদ্র মানুষের আশ্বিন-কার্তিক ও বৈশাখের শেষদিকের অভাবকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী আগাম টাকা দিয়ে নিজের জিম্মায় নিচ্ছেন দিনমজুরদের।

এখন দিনমজুরদের হাতে তেমন কাজ নেই। দিনে দিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। হাতে কাজ না থাকা ও জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি- এ দুইয়ের মাঝে আটকা পড়ে অসহায় দিনমজুর এলাকার দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে নিজের শ্রমকে আগাম বিকিয়ে দিচ্ছেন।এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চড়া সুদ হাতিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।


সরকারের সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হলেও সিংহভাগই কর্মসূচির বাইরের থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন দরিদ্র মানুষেরা। কার্তিকের আকাল ঠেকাতে শুধু পুরুষ শ্রমিকরাই নন, সঙ্গে নারী শ্রমিকরাও শহরে পাড়ি জমাচ্ছেন।


জানা যায়, চিলমারী উপজেলায় দরিদ্রদের এ সময়ের অভাবকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিক নিতে ইটভাটার সর্দাররা আগাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলে দিচ্ছেন দিনমজুরের হাতে। এ টাকা শ্রমিকের বায়নাবাবদ। যাতে শ্রমিকরা অন্যত্র কাজে যেতে না পারেন। এভাবে দিনমজুরের শ্রমকে আগাম কিনে নিচ্ছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী।


বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী উপজেলায় ইটভাটার সর্দার রয়েছেন ৪০-৫০ জনের মতো। এরা আগাম টাকা দিয়ে শ্রমিকদের কিনে নিচ্ছেন। একজন সর্দারের একাধিক ইটভাটার কাজ হাতে রয়েছে। একটি ইটভাটায় ৪০-৫০ শ্রমিক কাজ করেন। দারিদ্র্যে জর্জরিত এসব দরিদ্র মানুষ শ্রম বিকিয়ে পরিবারের সদস্যদের মুখে খাদ্য তুলে দেন। নিজের শরীরের রক্তঝরা ঘামে মুনাফা তুলে দেন ব্যবসায়ীদের হাতে, তবুও তাদের জীবনে নামে অমানুষিক নির্যাতন।


হাবিবুর রহমান নামের চিলমারীর এক ইটভাটার সর্দারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে জানান, আমরা শ্রমিক কাজে নিতে আগাম টাকা তুলে দিচ্ছি ঠিকই, তাদের বাধ্য করে কাজে নিচ্ছি না।


(দিরিপোর্ট২৪/এফএস/এএস/এমএআর/অক্টোবর ২৬, ২০১৩)