চট্টগ্রাম বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি : সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকির খবরের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ জানান, ভোরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ককটেল হামলাসহ যে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটানো হতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আসে। তাই বিমানবন্দর প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়।
নাশকতার হুমকি পাওয়ার পরপরই রাত থেকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নাশকতার আশঙ্কায় রাতভর ‘ক’ গ্যালারিসহ পুরো বিমানবন্দর জুড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। বিমানবন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। মূল প্রবেশপথ থেকে যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত র্যাব পুলিশ ও আনসার সদস্য।
মোস্তাক আহমেদ আরও জানান, ভোরে বুধবার রাত থেকে ৫০ জন পুলিশ সদস্য, ৫০ জন আনসার এবং অতিরিক্ত ৩৫-৪০ জন র্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের বিমানবন্দরের সামনে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আসে বৃহস্পতিবার ভোরেই চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় ব্যবহার হতে পারে ককটেল থেকে শুরু করে শক্তিশালী বোমা পর্যন্ত। সম্ভাব্য নাশকতা এড়াতে বুধবার রাতেই পুলিশকে সতর্ক করে ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি। পুলিশও তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে বিমানবন্দরের। বুধবার রাত থেকে নাশকতার আশঙ্কায় রাতভর ‘ক’ গ্যালারিসহ পুরো বিমানবন্দর জুড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় সন্দেহভাজন দোকানপাট, লোকজনকে তল্লাশি করে পুলিশ। পুরো এলাকায় টহল দেয় র্যাব ও পুলিশের আলাদা আলাদা টিম। এছাড়া বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথে ব্যারিকেডের সামনে পুলিশ ও আনসার সদস্য মিলে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছে। যানবাহন এবং যাত্রীদের তল্লাশির পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্দেহজনক মনে হলে তাদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ভিআইপি গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে একটি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা সাহাবউদ্দিন (২৭) নামে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের এক কর্মচারীকে আটক করেন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাহাবউদ্দিন জানায়, ওইদিন মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের এক কর্মীসহ দু’জন এসে ককটেলের প্যাকেটটি দিয়ে যায়। এসময় সাহাবউদ্দিন ককটেলসহ বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেন। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কর্মচারী হওয়ায় তাকে সন্দেহ করেনি বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা। ফলে মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য ভিআইপি কার পার্কিংয়ের স্থান ফাঁকা পেয়ে বিমানবন্দরের দোতলার জানালা দিয়ে ককটেল ছুঁড়ে আবার নিচে নেমে ইউনাইটেডের অফিসে চলে যায় সাহাবউদ্দিন। মূলত ওই ঘটনার পর থেকেই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্ক অবস্থায় আছে প্রশাসন।
(দ্য রিপোর্ট/কেএইচসি/এপি/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩)