আহমদুল হাসান আসিক, দ্য রিপোর্ট : এবার রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে পালিত হতে যাচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘বড়দিন’। এ কারণে আগামী সোমবার থেকে রাজধানী ঢাকাকে তিনস্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। গির্জাগুলোতে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাশকতাকারীরা এবার উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় যেকোনো উৎসবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে আছে জামায়াত-শিবির। তাদের অনেক নেতাকর্মী নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক রয়েছে। রাজধানীতে বিভিন্ন সময় নাশকতার পরিকল্পনা করলেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় বড় ধরনের নাশকতা করতে পারেনি তারা। এমনকি জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করার পরও তারা রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতা করতে পারেনি।

এদিকে সরকারের জামায়াত-শিবির বিরোধী কঠোর মনোভাবের কারণে এই দুই দলের বেশিরভাগ নেতা আত্মগোপনে আছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা গোপনে শক্তি সঞ্চয় করার পাশপাশি তারা নাশকতার করতেও ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ আশঙ্কার কারণে ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে এমন স্থানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বড়দিনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিষয়ে বুধবার পুলিশ সদর দফতরে ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা সার্বক্ষণিক নজর রাখবে। এরই মধ্যে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ গির্জায় ১ ডিসেম্বর থেকে দুইশ’ আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া রাজধানীজুড়ে র‌্যাব সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। অতিরিক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরির লক্ষ্যে বিজিবি মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিশেষ কৌশলও অবলম্বন করা হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মারুফ হাসানের নিজ কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিয়েছে রমনা বিভাগের সকল অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, রাজধানীর সবচেয়ে বড় গির্জা রমনা বিভাগে। এ কারণে এ এলাকায় আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এরই মধ্যে এলাকাভিত্তিক বিশেষ নিরাপত্তা কৌশল নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষ্যে কূটনৈতিক পাড়ায়ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জানুয়ারির ৫ তারিখের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নাশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ যত ঘনিয়ে আসবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ততই অবনতি হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/জেএম/এসকে/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩)