শের-এ-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক
দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : বাংলার বাঘ খ্যাত জাতীয় নেতা আবুল কাশেম ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বাকেরগঞ্জের সাটুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শের-এ-বাংলা নামেই তিনি বহুল পরিচিত। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী (১৯২৪), কলকাতার মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩), পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (১৯৫৫), ও পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর (১৯৫৬-৫৮) পদ অলঙ্কৃত করেন তিনি। মুসলীম লীগ, কৃষক প্রজা পার্টি, শ্রমিক-কৃষক দলসহ যুক্তফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন তিনি।
কাজী মুহাম্মদ ওয়াজেদ এবং সাইদুন্নেসা খাতুন ছিলেন তার বাবা-মা। স্মরণশক্তির জন্য শের-এ-বাংলা বিখ্যাত ছিলেন। শৈশবে গৃহশিক্ষকদের কাছে আরবি, ফার্সি ও বাংলায় শিক্ষা লাভ করেন। ১৮৮১ সালে বরিশাল জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৮৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় ঢাকা বিভাগে মুসলমানদের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেন। ১৮৯১ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৮৯৩ সালে তিনটি বিষয়ে অনার্সসহ প্রথম শ্রেণীতে বিএ পাস করেন।
নবাব আবদুল লতিফ সিআইই’র পৌত্রী খুরশিদ তালাত বেগম ছিলেন তার প্রথম স্ত্রী। খুরশিদের মৃত্যুর পর হুগলির জিন্নাতুন্নেসা বেগমকে বিয়ে করেন। জিন্নাতুন্নেসা মারা গেলে মিরাটের এক বিদুষী নারীকে বিয়ে করেন। তাদের সন্তান এ কে ফাইজুল হক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পাট প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে মারা যান।
কর্মজীবনে তিনি আইন ব্যবসাসহ বিভিন্ন সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৩ সালে শের-এ-বাংলা বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯১৪ সালে তিনি নিখিল ভারত কংগ্রেস দলে যোগ দেন। খেলাফত আন্দোলনেও তিনি অংশ নেন। জমিদার মহাজনদের অত্যাচার-নির্যাতন থেকে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র কৃষকদের বাঁচানোর জন্য প্রতিষ্ঠা করেন তার বিখ্যাত ঋণ সালিশি বোর্ড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
শিল্প সাহিত্য ও খেলাধুলার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনাসহ কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত নবযুগ পত্রিকার অর্থের যোগানদাতা ছিলেন তিনি। তিনি মোহামেডান ফুটবল ক্লাবের প্রতিষ্ঠার সময় থেকে জড়িত ছিলেন।
১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন তিন নেতার মাজারে তিনি সমাহিত।
(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/ডব্লিউএস/জেএম/অক্টোবর ২৬, ২০১৩)