‘কনেমূল্য’ গরু!
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিয়েতে যৌতুক হিসেবে কত কিছুই না মানুষ দেয়। তাই বলে বিয়েতে গরু যৌতুক! এমনটা হয়তো আমাদের দেশে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা কিন্তু আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভিন্ন দেশে অহরহই ঘটছে। কেননা, সেখানে বিয়েতে ‘কনেমূল্য’ হিসেবে গরু যৌতুক দেয়াটা একটা ঐতিহ্যও বটে। আর এই যৌতুক দিতে পারলে তবেই কোনো পুরুষ বিয়ে করতে পারেন।
আর ওই অঞ্চলে বিয়েতে কেন এ ধরনের যৌতুক দেয়া হয় জানেন? কারণ আফ্রিকাতে ‘গরুকে’ সম্পদশালীত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া যে পুরুষ বিয়েতে গরু দিতে পারছে সে তার স্ত্রীর দেখভাল করতে পারবে বলেও ধরে নেয়া হয়।
কোনো একজন পুরুষ বিয়ে করতে চাইলে কনের পরিবারকে ‘কনেমূল্য’ দিতে হয়। আর এই ‘কনেমূল্যকে’ বলে লোবোলা। কিন্তু এই ‘লোবোলা’ টাকার বিনিময়ে দেয়া হয় না। এর পরিবর্তে বরপক্ষ কনেপক্ষকে লোবোলার সমপরিমাণ অর্থমূল্যের গরু যৌতুক হিসেবে দেয়।
বলা হয়ে থাকে উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্যই এটা করা হয়। কেননা ওই অঞ্চলের মানুষ মনে করে বিয়েটা কেবল দু’জন ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিয়ের মাধ্যমে দু’টি পরিবারের মধ্যে এক ধরনের বন্ধন গড়ে ওঠে।
আফ্রিকার কয়েকটি উপজাতির মধ্যেও এ ধরনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। তবে একেক উপজাতির কাছে এই ‘কনেমূল্যর’ ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। লোজো, জুলু এবং জোসা উপজাতির কাছে এটির নাম ‘লোবোলা বা লোবোলো’। সেসোথো উপজাতির কাছে এটির নাম ‘মাহাদি’, শোনা উপজাতির কাছে ‘রোরা’। আর সোথোদের কাছে এটির নাম ‘মাগাদি’।
তবে ধনী বা সম্পদশালীদের মধ্যে বিয়েতে যৌতুক হিসেবে গরু দেয়ার প্রবণতা দিন দিন কমে আসছে। তারা গরুর পরিবর্তে টাকা দিতেই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।
সূত্র: বিবিসি ও উইকিপিডিয়া।
(দ্য রিপোর্ট/আদসি/এনডিএস/রাসেল/ডিসেম্বর ২০, ২০১৩)