রাজনৈতিক অস্থিরতায় হুমকির মুখে পর্যটন শিল্প
কক্সবাজার সংবাদদাতা : অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ঘনঘন হরতাল এবং অবরোধের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটন খাত। লোকসান দিতে দিতে দেউলিয়া হওয়ার পথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল মালিকরা। আয় কমে যাওয়ায় চলছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাটাই। অনেক রেস্টেুরেন্ট ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। নেই পর্যটক, তাই খা খা করছে সৈকতের বালিয়াড়ি। এ খাতের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এখন হুমকির মুখে।
পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত নভেম্বর মাস থেকে কক্সবাজারে পর্যটক কমতে শুরু করেছে। এখন পর্যটক নেই বললেই চলে। ফাঁকা সৈকত পড়ে আছে পর্যটকবিহীন।
পর্যটক না থাকায় আয়ের পথ্ও বন্ধ হয়ে গেছে। লোকসান দিতে দিতে হোটেল-মোটেল মালিকরা দেউলিয়া হওয়ার পথে। এমনটিই জানালেন, হোটেল দ্য কক্স টুডে’র পরিচালক অপারেশন সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, আমাদের মতো স্টার মানের হোটেলগুলোতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা। কোনও পর্যটক না থাকলেও স্টাফদের জন্য সব কিছু করতে হয়।
হোটেল ওসান প্যারাডাইজের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাঈদ আলমগীর জানান, তাদের হোটেলে গত ৩ মাসে সাড়ে ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মালিকের পক্ষে হোটেল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
পর্যটন মোটেল লাবনীর ব্যবস্থাপক রাশেদুল হক খান বলেন, ভাই অনেক দিন ধরে কোনও পর্যটক নাই। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কিছু রুম বুকিং হয়েছিল, কিন্তু অবরোধের কারণে তাও বাতিল হয়ে গেছে।
গত নভেম্বর থেকে এ খাতে খুব খারাপ অবস্থা যাচ্ছে বলে জানান হোটেল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী।
কক্সবাজার রেস্টেুরেন্ট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কাশেম আলী বলেন, আমাদের প্রায় ১শ খাবার হোটেল এখন বন্ধ রয়েছে। যারা খোলা রেখেছেন তারাও কষ্টের মধ্যে আছেন।
জানা গেছে, বছরের শুরু থেকেই বিরোধী দলের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং চলমান সহিংসতার কারণে চলতি পর্যটন মৌসুমে বিদেশি পর্যটকরা আসছেন না। একটানা সহিংস অবরোধের কারণে দেশীয় পর্যটকেরাও কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন না। পর্যটক শূন্যতার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এ খাতের সঙ্গে জড়িত সবার উপর। বেকার হয়ে পড়ছে প্রচুর লোকজন।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (প্রকিউরমেন্ট) পারভেজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিদেশী পর্যটক বাদ দিলেও পর্যটন মৌসুমে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা দেড় লাখও হয়নি।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে রয়েছে সাড়ে তিন শতাধিক হোটেল-মোটেল।
(দ্য রিপোর্ট/এসএএম/এইচকে/জেএম/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)