চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : এশিয়া ও ইউরোপ ছাড়িয়ে এবার নিউজিল্যান্ডের বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি জাহাজ। আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডে অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ রফতানির আদেশ পেয়েছে চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।

জানা গেছে, নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওই দরপত্রে বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও নিউজিল্যান্ডের ১২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে প্রায় ৬৬ লাখ মার্কিন ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫২ কোটি টাকা) জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশটি পায় ওয়েস্টার্ন মেরিন। এ ব্যাপারে ১২ ডিসেম্বর অনলাইনে নিউজিল্যান্ড নিয়ন্ত্রিত টোকেলাউ দ্বীপের প্রশাসকের সাথে ওয়েস্টার্ন মেরিনের একটি চুক্তি হয়েছে।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এতদিন নদী ও উপকূলীয় এলাকার জন্য যাত্রীবাহী জাহাজ রফতানি করলেও এবার মহাসাগরে চলাচলের উপযোগী জাহাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের জাহাজ নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক নৌসংস্থার ‘সাগরে জীবনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাবিষয়ক কনভেনশনে’র (সোলাস) শর্ত প্রতিপালন করতে হয়। তা মেনেই জাহাজ রফতানির কার্যাদেশ পেয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন। অর্থাৎ এ জাহাজটিতে সমুদ্রে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থাকবে।

তিনি আরো জানান, নিউজিল্যান্ডের জন্য জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে আমরা জাহাজ রফতানির নতুন বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। এতে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে।

ওয়েস্টার্ন মেরিনের কর্মকর্তারা জানান, জাহাজটি হবে পরিবেশবান্ধব। এর দৈর্ঘ্য ৪৪ মিটার, প্রস্থ ৯ দশমিক ৯ মিটার। মহাসাগরে ঘণ্টায় সাড়ে ১১ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম হবে এটি। জাহাজটিতে ডিজেলের পাশাপাশি সৌরশক্তি এবং বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। জাহাজটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার টোকেলাউ দ্বীপ থেকে সামোয়া দ্বীপপুঞ্জে চলাচল করবে। জাহাজটির নকশা তৈরি করবে ডেনিশ কোম্পানি ‘নুড হ্যানসেন এ/এস’। আর নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করবে যুক্তরাজ্যের ‘লয়েডস রেজিস্ট্রার অব শিপিং’। আগামী বছরের ডিসেম্বরে জাহাজটি সরবরাহ করার কথা রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/কেএইচএস/এইচকে/জেএম/লতিফ/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)