‘অবরোধ থাখে আমরা বাচমু কিলাবা’
সিলেট অফিস : রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সিলেটে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। স্তব্ধ হয়ে গেছে ব্যবসায়িক অঙ্গনও। টানা অবরোধের কারণে এর তীব্র প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ীদের ওপর। তাদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতার মাধ্যমে এ সংকট থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসবে।
সিলেটের সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনি প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়। এই সেক্টর থেকে সরকার মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। কিন্তু টানা অবরোধের কারণে প্রতিদিন তিন কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
দ্য রিপোর্টকে এমনই তথ্য দিয়েছেন সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ। তিনি বলেন, অবরোধের আগেও বাংলাদেশের কয়লা আমদানিকারকরা ভারত থেকে প্রতিদিন দুই হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করেছেন। কিন্তু টানা অবরোধের ফলে এখন প্রতিদিন তিনশ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি হচ্ছে। ফলে সরকারও প্রতিদিন তিন কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সিলেটের পাঁচটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানিকারকরা ভারত থেকে কয়লা আমদানি করেন। কিন্তু অবরোধের কারণে আমদানি বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এছাড়া পাঁচটি শুল্ক স্টেশনে প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিকও এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের কোনো কাজ নেই। অনাহারে-অর্ধাহারে তারা দিন কাটাচ্ছেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় এসে ব্যবসা-বাণিজ্য ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান তিনি।
সিলেট চেম্বারের সাবেক প্রশাসক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ব্যবসায়ী সমাজ কদিন আগেও সাদা পতাকা হাতে নিয়ে মানববন্ধন করেছেন। এটা অব্যাহত রাখা উচিৎ। যেভাবে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াচ্ছে তাতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামা স্বাভাবিক। এসব থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় রাজনৈতিক সমঝোতা। তা না হলে ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা দায় হবে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে।
সিলেট নগরীর টিলাগড়ের ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুছ মোঃ সেলিম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘খালি (শুধু) অবরোধ আর অবরোধ। আমরা কিলা বাচতাম বা (আমরা কিভাবে বাঁচবো)। ইলা যদি অবরোধ থাখে (এভাবে যদি অবরোধ হয়), আমরা তো ব্যবসা খরতে ফারতাম নায় (আমরা আর ব্যবসা করতে পারবো না)।’
(দ্য রিপোর্ট/এমজেসি/এমএআর/রাসেল/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)