ঝিনাইগাতীতে মাল্টিমিডিয়া কর্মসূচি ব্যর্থ
শেরপুর সংবাদদাতা : শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে সরকারের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম কর্মসূচি ব্যর্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজসহ প্রায় ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ডিজিটাল ক্লাসের আওতায় আনার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি একটি ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্পিকার, পেনড্রাইভ, ইন্টারনেট মোডেমসহ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে এসব যন্ত্রপাতির প্যাকেটও খোলা হয়নি। শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের প্রাথমিক ধারণাও নেই। কারণ এ পর্যন্ত তাদের কোনো মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাঠদান কার্যক্রম আনন্দময়, সহজবোধ্য ও শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই-প্রকল্প উদ্ভাবিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও শিক্ষকদের দিয়ে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে কর্মসূচির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করার পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের জন্য দেওয়া মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এমনকি ডিজিটাল পদ্ধতির মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে কনটেন্ট তৈরি ও পাঠদানের জন্য দেওয়া ল্যাপটপ, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিজের ব্যক্তিগত ও বিনোদনের কাজে ব্যবহার করছেন।
উপজেলার জনৈক কম্পিউটার শিক্ষক নাম না বলার শর্তে জানান, ‘চলতি বছরের মার্চ মাসে ল্যাপটপ ও সেপ্টেম্বর মাসে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর পেয়েছি। এ সময়ের মধ্যে ৬ দিন ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।’ তবে শিক্ষার্থীদের দাবি তারা এক দিনও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস করতে পারেনি।
উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে হতাশাজনক চিত্র। ডিজিটাল ক্লাসের এমন হতাশাজনক পরিস্থিতিতে অসন্তোষ বিরাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখনের পাশাপাশি দাফতরিক কাজেও কম্পিউটারের ব্যবহার নেই।
ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম আবু ওবায়দা আলী জানান, কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরী না থাকায় অনেক শিক্ষক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বাড়িতে রেখেছেন। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে কোনো ডিজিটাল ক্লাস নেওয়া হয় না বলে সত্যতা স্বীকার করেন তিনি।
(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এপি/নূরুল/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)