একই ইউনিয়নে ৪০ ডাকাত!
এদিকে, ওই এলাকার ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, সড়ক ডাকাতি প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। আবার ব্যবস্থা নিলেও আইনের ফাঁকে তারা বেরিয়ে এসে আবারও আগের পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন।
বাড়বকুণ্ডের নতুনপাড়া গ্রামের অলি আহম্মদের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৪) একজন সড়ক ডাকাত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গাড়ির যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করেন। এভাবে যা পান তা দিয়ে চলে তার সংসার।
২০০৮ সালে ডাকাতিকে পেশা হিসেবে নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত ডাকাতি করেছেন তিনি। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকবার জেলেও যেতে হয়েছে তাকে।কিন্তু এরপরও ডাকাতি ছাড়তে পারেননি তিনি। জেল থেকে এসে আবারও জড়িয়ে পড়েন ডাকাতিতে।
দেলোয়ার জানান, তার বাবা অলি আহম্মদও একসময় ডাকাতি করে সংসার চালাতেন। দাদাও ছিলেন ডাকাত। এক কথায় বংশাণুক্রমে ডাকাতিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন তারা। শুধু তাদের পরিবারই নয় গ্রামের আরও বহু পরিবার বংশাণুক্রমে ডাকাতিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
সম্প্রতি পুলিশের এক বিশেষ অভিযানে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ দেলোয়ারকে গ্রেফতার করেন। এ প্রতিবেদকের কথা হয় তার সাথে।
সীতাকুণ্ড থানা সূত্রে জানা যায়, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে দেলোয়ারসহ অন্তত ৪০ জন ডাকাতের বাস করে। তারা প্রত্যেকেই বংশাণুক্রমে ডাকাতি করে আসছেন। তাদের বসবাস নতুন পাড়া, মিজিপাড়া, অলিনগর গ্রামে। সম্প্রতি এসব এলাকা থেকে রসুল খান (২১) ও মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৮) নামে আরও দুই ডাকাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আইনের ফাঁক দিয়ে তারা বেরিয়ে এসে আবারও ডাকাতি শুরু করেন।
মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, শুকলালহাট, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে তারা ডাকাতি করে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেন। ফলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, এ থানায় যোগদানের পর জানতে পারি রোড ডাকাতি এখানে একটি বড় সমস্যা। বিশেষত বাড়বকুণ্ডসহ কয়েকটি স্থানে নিয়মিত ডাকাতি হয়। এসব এলাকায় ডাকাতি বন্ধে কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে এলাকার আলোচিত ডাকাত সর্দার দেলোয়ারসহ কয়েকজনকে দুটি বন্দুক ও কার্তুজসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য ডাকাতদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
(দ্যারিপোর্ট২৪/সৌমিত্র চক্রবর্তী/এমএআর/অক্টোবর ০৫, ২০১৩)