জয়পুরহাটে মৃত্যুর মিছিলে শামিল আরও এক শ্রমিক
জয়পুরহাট সংবাদদাতা : জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের চক্রপাড়া গ্রামে শনিবার আরো এক শিলপাটা শ্রমিক মারা গেছে। নিহত শ্রমিকের নাম সোহেল রানা (২৩)। সে আক্কেলপুর পৌর এলাকার চক্রপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র।
মৃত্যুর মিছিলে সবশেষ এই শ্রমিক যোগ হওয়ায় তিন মাসে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১০জনে। দু’বছরে মারা গেছে ৫০জন। মাত্র ৫ থেকে ৬ বছর কাজ করে ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে এসব শ্রমিকরা মারা যাচ্ছে । অথচ প্রশাসন নীরবে দেখছে।
এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পাথর কিনে এলাকার যুবক ছেলেদের দিয়ে বেশি মূল্যে শিলপাটা তৈরি করে বিক্রি করছে। অর্থের পাহার গড়ছে ওই সব মহাজন আর অকালে ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণগুলো।
নিহতের পিতা আব্দুল জলিল জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান লোভের বশে ঝুঁকিপূর্ণ শিলপাটা শ্রমিকের কাজ করে। ৬ বছরের ব্যবধানে সে ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। শনিবার সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আর কত প্রাণ ঝড়ে গেলে এ মরণ শিলপাটা কারখানা বন্ধ হবে? তিনি দ্রুত এ শিলপাটা কারখানা বন্ধের দাবি জানান।
আক্কেলপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম জানান, ‘দুবছরের ব্যবধানে চক্রপাড়া গ্রামে প্রায় ৫০জনের মৃত্যু ঘটেছে। অসুস্থ্ হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছে প্রায় শতাধিক শ্রমিক। অবিলম্বে এ মরণ শিলপাটা কারখানা বন্ধ করা না হলে এ গ্রাম মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবে।’
আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার দাশ জানান, তিনি বহুবার পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু তার প্রচেষ্টায় এ কারখানা বন্ধ কিংবা স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারেননি। এ অবস্থায় প্রশাসন উদ্যোগ না নিলে অবিলম্বে এ গ্রামগুলোতে ভয়াবহ অবস্থা দেখা দেবে।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ বলেন, কারখানা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের কপি সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করেও কোনো সাড়া পাইনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এএএম/এপি/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)