দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শনিবার বিকেলে ঢাকার বিয়াম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের বায়ান্নতম পর্ব। অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ন কবির এবং সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমীর।

আলোচনার শুরুতে একজন দর্শক প্রশ্ন করেন, নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে যেসব পরামর্শ দিচ্ছে, তাকে কি একটি স্বাধীন দেশের ওপর বিদেশি চাপ হিসেবে দেখা যেতে পারে?

এমন প্রশ্নের উত্তরে এইচ টি ইমাম বলেন, চাপ তো বটেই পরামর্শ হলে তো বন্ধুত্বপূর্ণই হতো।

হুমায়ন কবির বলেন, বিদেশি বন্ধুরা যদি আমাদের পরামর্শ দেয় তবে তা চাপ হবে কেন? আমাদের কথার প্রতিধ্বনি আসলে তাকে চাপ হিসেবে নেবো কেন? তারা বলছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করার কথা।

তানিয়া আমীর বলেন, ইইউ বা ইউএসএসহ আরো অনেক আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা বাংলাদেশের একটা ইমেজ দেখতে পাই। মনে রাখতে হবে এটা শুধু ক্ষমতার খেলা না, আরো জিও পলিটিক্যাল বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তারপর বলা যাবে এটা চাপ কিনা?

বাংলাদেশে রাজনীতি কি ব্যক্তিগত সম্পদ সৃষ্টির একটি সহজ উপায় হয়ে দাড়িয়েছে?

এই প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক বলেন, এ ব্যাপারে দুদকের আরো জোরদার হওয়া উচিত ছিলো। নির্বাচন কমিশনেরও নজরদারির প্রয়োজন ছিলো।

এইচ টি ইমাম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে জবাবদিহি করা উচিত।

হুমায়ন কবির বলেন, এটা সকল দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এটা আমাদের রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর।

একজন দর্শক প্রশ্ন করেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই আলোচনার মাধ্যমে পূনরায় নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে এখনই রাজনৈতিক সমঝোতা করে নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায়?

এই প্রশ্নের উত্তরে এইচ টি ইমাম বলেন, এখন নির্বাচনের তারিখ পুন:নির্ধারণ করলে ২৪ জানুয়ারির আগে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য সাংবিধানিক চর্চা অব্যাহত রাখা দরকার।

তিনি আরো বলেন, ইইউ এ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ না করলেও অন্যান্য অনেক দেশেরই আগ্রহ আছে।

ড. ওসমান ফারুক বলেন, যেখানে দশম সংসদই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সেখানে একাদশ সংসদকে গ্রহণ করার কোন কারণ নেই। আজকের সংকটের মূল হলো একটি অনাকাঙ্খিত সংশোধনী। এটি নিয়ে সারা পৃথিবীর অসংখ্য দেশ প্রশ্ন তুলেছে এবং ৫ কোটি ভোটারকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। জাতীয় অমর্যাদা হয়েছে।

তানিয়া আমীর বলেন, অনাকাঙ্খিত পরিবর্তনের কথা বলা হলেও এ সংশোধনীকে কেন চ্যালেঞ্জ করা হয়নি এখনো।

হুমায়ন কবির বলেন, নির্বাচনের পদ্ধতি, প্রার্থীতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি রাজনৈতিক। তবে দশম সংশোধনী নিয়ে এখন আর সমঝোতার সুযোগ নেই।

কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার যে দাবি উঠেছে, তা কি যৌক্তিক?

জবাবে ওসমান ফারুক বলেন, সরকার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীতা করতে পারতো। এটা দেখা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

এইচ টি ইমাম বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা এতো চট করে সম্ভব না। তবে এটা বের হয়েছে যে, পাকিস্তান কোন দিনই বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে মেনে নেয়নি।

(দ্য রিপোর্ট/বিকে/এসবি/ডিসেম্বর ২১,২০১৩)