‘যৌথবাহিনীর মাধ্যমে সরকার নৃসংশতা চালাচ্ছে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকার যৌথবাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে নৃসংশতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ।
রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, ‘সরকারের অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক এবং প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণে দেশ আজ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিপতিত। রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে সরকার অব্যাহতভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা সারাদেশে মানুষের বাড়িঘরে হামলা, লুটতরাজ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এক ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। সারাদেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ’সরকার যৌথবাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে সাতক্ষীরায় যে নৃসংশতা চালিয়েছে, মানব সভ্যতার ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আব্দুল খালেকের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সদর পূর্ব জেলা আমীরের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।’
মকবুল আহমাদ বলেন, ‘বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ সরকারের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। যৌথবাহিনী ও দলীয় কর্মীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে সদর ও কালিগঞ্জ উপজেলা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।’
একই সঙ্গে প্রায় ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে তিনি জানান।
যৌথবাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় জয়পুরহাট, লালমনিরহাট, নীলফামারী, মেহেরপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ ৩৫টি জেলায় গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।
গত ১০ দিনে সাতক্ষীরায় ৭ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৩ জন, নোয়াখালীতে ১১ জন, নীলফামারীতে ৮ জন, লালমনিরহাটে ৪ জন, জয়পুরহাটে ৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৩ জন, চাঁদপুরে ২ জন, চট্টগ্রামে ২ জন, পিরোজপুরে ১ জন, কুমিল্লায় ১ জনসহ সারাদেশে বিরোধী দলের ৬০ জন নেতাকর্মী নিহত এবং ১ হাজার ৮০০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলেও দাবি করা হয় দলটির পক্ষ থেকে।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, সরকার বাংলার সবুজ জমিনকে রক্তে রঞ্জিত করছে। একই সঙ্গে দেশকে একটি কারাগারে পরিণত করেছে। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোন রাজনৈতিক দল বা সরকার রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বুকে গুলি চালাতে বাধ্য করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, সংবিধান মানে না। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে সার্বজনীন মানবাধিকারের প্রতি এ সরকারের ন্যূনতম বিশ্বাস নেই। এই সরকারের হাতে দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয়।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, চীন, কানাডাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা সরকারের ভূমিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু সেসব অগ্রাহ্য করে সরকার বিশ্বসম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
(দ্যরিপোর্ট/এসএ/জেএম/ডিসেম্বর ২২, ২০১৩)