মঙ্গলবার চূড়ান্ত আল্টিমেটাম দেবেন খালেদা জিয়া
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করবেন।
চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দেশের চলমান সংকট ও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন দেশবাসীর সামনে বক্তব্য তুলে ধরবেন। গুলশানে তার নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, ২৮ ডিসেম্বর থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। এর আগে ঘোষিত নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিতে সরকারকে শেষবারের মতো আল্টিমেটাম দেবেন বিরোধীদলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়া। দাবি মেনে নিতে সরকারকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে ৩ দিনের সময় বেধে দেবেন তিনি।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দ্য রিপোর্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়। চলমান অবরোধ শেষ হলে ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের কারণে কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে না বিএনপি। ২৬ ডিসেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশের মতো ছোট কর্মসূচি থাকতে পারে। ২৭ ডিসেম্বর থাকতে পারে অবরোধকালে নিহত জোট নেতাকর্মীদের গায়েবানা জানাজা। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হতে পারে অসহযোগ আন্দোলন। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া নিজেই অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।
সূত্রমতে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ‘গণকারফিউ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিতে পারেন খালেদা জিয়া। এছাড়া অসহযোগ আন্দোলনকালে সপ্তাহের কোনো দিন বিরতি না দিয়ে থাকতে পারে অবরোধ, ঘেরাও, গণমিছিল কর্মসূচি। ‘গণকারফিউর’ দিন ভোটারদের ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, ২৬-২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই ১৪৬ আসনের নির্বাচনী ব্যালট পেপার জেলা রির্টানিং অফিসারের কার্যালয়ে পাঠাবে নির্বাচন কমিশন। ব্যালট পেপার যাতে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছতে না পারে, সেজন্য পথে-পথে অবরোধ ও মানববাধা তৈরি করবে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে জোটের ‘কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচন প্রতিহত কমিটিও’ সক্রিয় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পাহারা বসিয়ে সতর্ক দায়িত্ব পালনের জন্যও নির্দেশনা দেওয়া আছে কেন্দ্রীয়ভাবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া আল্টিমেটাম ও কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি সেনা বাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশেও কিছু আহ্বান রাখতে পারেন। ‘একতরফা ও জনবিচ্ছিন্ন প্রহসনের’ নির্বাচনে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকার জন্য সেনা বাহিনীর প্রতি আহ্বান রাখবেন তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করে জনমতের সঙ্গে সহমত পোষণ করার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদ্দেশেও তিনি বক্তব্য দিতে পারেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিরোধী দলের ওপর সরকার যেভাবে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে তা আওয়ামী লীগের জন্য একদিন কাল হবে। বেগম জিয়া সব সময় আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতা চেয়েছেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর একগুয়েমির কারণে সমঝোতা সম্ভব হয়নি। সামনের দিনগুলোতে সরকার এর জবাব পাবে।’
(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এনডিএস/ডিসেম্বর ২৩,২০১৩)