দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্ব পালনকালে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯৩ সদস্য নিহত ও এক শ’ ৩৯ জন আহত হয়েছেন।

বেনিন শান্তিরক্ষা সেনা দিবসের ১০ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সোমবার সিএলএনবি আয়োজিত এক স্মরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়া।

এ ছাড়া অন্যান্য আলোচকরা হলেন- সাবেক এমপি এস এস আকরাম, বর্ষীয়ান রাজনীতিক কমরেড নূরুল হক মেহেদী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ছাইফুল ইসলাম শিশির, প্রশিকার পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নার্গিস জাহান বানু, জলজলা কৃষিজমি-বনভূমি রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহজাহান কবীর জহীর, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল সরকার, গার্মেন্টস শ্রমিক নেত্রী সাহিদা সরকার, সিএলএনবি প্রতিনিধি রেজাউল ইসলাম, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির শামছুল আলম প্রমুখ।

লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর মাসুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ। উপস্থাপনা করেন জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূর উন নাহার মেরী। আলোচনা শেষে শহীদ সেনা সদস্যদের স্মরণে মোনাজাত করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় ২৫ ডিসেম্বর) শান্তিরক্ষা মিশন থেকে দেশে ফেরার পথে পশ্চিম আফ্রিকার বেনিনে বিমান দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। বেনিন দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- লে. কর্নেল আরেফিন, মেজর রওনক, মেজর রহিম, মেজর মুস্তাফিজ, মেজর মোশাররফ, মেজর ইমতিয়াজ, মেজর বাতেন, ক্যাপ্টেন আব্দুল মাবুদ, ক্যাপ্টেন রাকিব, ক্যাপ্টেন আরিফ, ক্যাপ্টেন রফিক, ক্যাপ্টেন ফরিদ, ক্যাপ্টেন জাহিদ, ক্যাপ্টেন আলাউদ্দিন ও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শফিক।

সভায় বলা হয়, শান্তি মিশনে সেনা সদস্যদের পাঠানোর ফলে আগে যে সকল আফ্রিকার দেশ বাংলাদেশের নাম জানতো না, তারাও এখন জানে। পাশাপাশি দেশের বাণিজ্য প্রসারের সম্ভাবনার দরজাও খুলছে।

পঠিত প্রবন্ধে বলা হয়, ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন দেশের মোট ৬৭টি মিশনের মধ্যে বাংলাদেশ সার্থকভাবে ৪৮টি শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। ইরাকে অপারেশন মরু প্রান্তর ও অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনসহ মোট ৩৮টি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক লাখ ২২ হাজার ৩শ’ ১০ জন সদস্য অংশ নিযেছেন।

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯টি মিশনের মধ্যে ৮টিতে বাংলাদেশের সেনাসদস্যরা কর্মরত রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বর্তমানে সশস্ত্রবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশসহ বাংলাদেশের ৭ হাজার ৯শ’৬৮ জন শান্তিরক্ষীর দায়িত্বে নিয়োজিত আছে বলেও লিখিত প্রবন্ধে জানানো হয়েছে।

প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আজ উল্লেখযোগ্য নাম। নীল হেলমেটের ধারক হিসেবে বাংলাদেশ একটি গৌরবজ্জ্বল অধ্যায়ের মালিক। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার কারণে সিয়েরা লিওন বাংলা ভাষাকে তাদের দেশের দাফতরিক ভাষার মর্যাদা দিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট /এম/এমএইচও/এসকে/নূরুল/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩)