দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে একটি নীরব ঘাতক। অধিকাংশ সময়ই এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু নীরব এই ঘাতক কোনো ব্যক্তিকে হৃদরোগ, স্ট্রোকের মতো রোগের দিকে ঠেলে দেয়।

এক হিসেবে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ আছে। প্রতিবছর ৯০ লাখের বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায়।

তবে সমস্যা যখন আছে, তার সমাধানও আছে। আর সেই সমাধান নিহিত কিন্তু পরিমিত এবং নিয়মমাফিক খাবার গ্রহণের উপর। দ্য রিপোর্টের পাঠকদের জন্য এমনই ১২ ধরনের খাবারের তালিকা তুলে ধরা হলো যেগুলো উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়ক।

১. কলা: আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে কলা খেতে পারেন। কলার দামও খুব বেশি না, তাছাড়া বছরজুড়েই পাওয়া যায়। একই সঙ্গে এতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। আর পটাশিয়াম রক্তচাপ দুই থেকে তিন পয়েন্ট কমিয়ে আনে। যার ফলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও কমে আসে।

২. সর-তোলা দুধ: যদি আপনি উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে চান তাহলে প্রতিদিন এক গ্লাস করে সর-তোলা দুধ খেতে পারেন। আর সর-তোলা দুধ আপনার শরীরের জন্য যেমন উপকারি তেমনি এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি রয়েছে। এই দুই উপাদান মিলে একদিকে যেমন আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে তেমনি আপনার হাড়কে করবে মজবুত।

৩. তরমুজ: তরমুজ কেবল গরমের সময় আপনার তেষ্টা মেটায় না, পাশাপাশি আপনার হৃদপিন্ডেরও খেয়াল রাখবে। কারণ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, লাইকোপেনেস, ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম রয়েছে। যেগুলো আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৪. কমলা: কমলাও আপনার উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে দারুণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই আর দেরি না করে প্রতিদিন এক গ্লাস কমলার জুস বা একটা আস্ত কমলাই খেয়ে নিন। যা আপনার শরীরে ফাইবার ও ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণ করবে। পাশাপাশি রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করবে।

৫. চকলেট: চকলেটপ্রেমীরা কিন্তু এবার একটু খুশি হতে পারেন। কারণ প্রতিদিন এক টুকরো চকলেট আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। তবে যেনতেন চকলেট খেলে হবে না। খেতে হবে ফ্লাভোইডস সমৃদ্ধ চকলেট। কারণ ফ্লাভোইডস সমৃদ্ধ চকলেট ধমনীর কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।

৬. সূর্যমুখীর বিচি: সূর্যমুখীর বিচি ভিটামিন ই, ফোলিক অ্যাসিড, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। তাই উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সূর্যমুখী দারুণ কার্যকরী হতে পারে। তাই রক্তচাপ প্রতিরোধে প্রতিদিন লবণ ছাড়া চিবিয়ে খান সূর্যমুখীর বিচি।

৭. দানাদার খাবার: সকালের নাস্তায় খেতে পারেন দানাদার খাবার। কারণ সকালের নাস্তায় দানাদার গম বা যব জাতীয় খাবার খেলে একদিকে দীর্ঘসময় ক্ষুধামুক্ত থাকতে পারবেন, অন্যদিকে এগুলো আপনার রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

৮. পুঁইশাক: পুঁইশাকে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে। পুঁইশাকে কম মাত্রার ক্যালরি, উচ্চ ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনিসিয়াম রয়েছে। আর এগুলো প্রতিটি উপাদানই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৯. মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। আর পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

১০. আঙুরের জুস: আঙুরের জুসও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে। কারণ আঙুরে রয়েছে পলিফিনোলস যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় রক্তচাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন অন্তত দুই গ্লাস আঙুরের জুস পান করুন।

১১. সিম জাতীয় বিচি: বিভিন্ন ধরনের সিম জাতীয় বিচি খেতে পারেন। কারণ এসব সিম জাতীয বিচিতে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ায় রয়েছে। যা রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১২. জাম: আপনার খাবার তালিকা সব ধরনের জামও রাখতে পারেন। কারণ জাম জাতীয় খাদ্যে পলিফিনোলস, ফ্লাভোনোলস এবং অ্যান্থোসায়ানিনস রয়েছে। এছাড়াও এসব ফলে ভিটামিন সি, ফ্লোট, পটাশিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুব সহায়ক।

তাই আর দেরি কেন দ্রুত আপনার প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায় যোগ করে ফেলুন এই ১২ ধরনের খাবার।

(দ্য রিপোর্ট/আদসি/জেএম/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩)