দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে জারি করা নোটিশের জবাব দিতে দুপুর ২টার মধ্যে স্ব-শরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট (গ্রেফতারি পরোয়ানা) জারি করা হবে।

চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার সকালে আদেশ এ দেন।

আদালতে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাহফুজ উল্লাহ এবং সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি। তাই শুনানির জন্য সময় প্রয়োজন।’

আদালত আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহকে ফোন করে এখনি আসতে বলেন। যদি উনি হাজির না হন তাহলে আমরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করব।’

তখন তারিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করার আবেদন করেন। উত্তরে আদালত বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) স্ব-শরীরে হাজির হওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল। সুতরাং আদালতে হাজির হয়ে মুলতবির আবেদন করবেন।’

অতঃপর দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় দেন এবং জানান, এ সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে।

গত ১ ডিসেম্বর মাহফুজ উল্লাহ স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার রুলের জবাব দিয়েছিলেন। ওই দিন পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল-১।

গত ২৮ নভেম্বর তাকে হাজির হতে আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল-১। গত ২৬ সেপ্টেম্বর গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে তলব করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় বরাবর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বেসরকারি চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর কর্তৃপক্ষসহ ৮ জনকে বিবাদী করে অভিযোগ দাখিল করে।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, তুরিন আফরোজ, সুলতান মাহমুদ সীমন, তাপস কান্তি বল, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও রেজিয়া সুলতানা চমন এ আবেদন দাখিল করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ১১(৪) ধারা মোতাবেক কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না তা, জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে তাদের অভিযুক্ত করে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানা করার আবেদন করা হয়।

আবেদনে বাকি বিবাদীরা হলেন, চ্যানেল ২৪ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী পরিচালক, হেড অব প্রোগ্রাম, মুক্তবাক নামক অনুষ্ঠানের প্রডিউসার এবং ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মাহমুদুর রহমান মান্না।

প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর চ্যানেলে ২৪ এর রাত ১১টার ‘মুক্তবাক’ নামক টকশোতে ট্রাইব্যুনালের বিচার বিষয়ে এই মন্তব্য করেন।

টকশোতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিচারপতি শামীম হাসনাইন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন তাকে দেওয়া হয়নি। তাহলে কি বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদবে না?’

এছাড়া টকশোতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সাফাই সাক্ষীদের নিয়ে মন্তব্য করারও অভিযোগ করে প্রসিকিউশন।

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এমসি/এমডি/শাহ/ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩)