ছায়ানটে কত্থকের মায়াবী মুদ্রায় দোলায়িত দর্শক
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ছায়ানটে কত্থকের মায়াবী মুদ্রায় দোলায়িত হলো দর্শক। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবন মিলনায়তনে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে তিনদিনের কত্থক নৃত্য উৎসব। কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়ের আয়োজনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
শিল্পীর পায়ের ঘুঙুরের শব্দের কারুকাজ আর ঘূর্ণায়মান দৈহিক ভঙ্গিমায় পরিবেশিত হয় কত্থক নৃত্য। এ নৃত্যে অভিনয় বা নাটকীয় ভাবধারার সমন্বয়ে মূলত ধর্মীয় চেতনাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। পাখোয়াজ ও তবলার বোলে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠা এ নৃত্যের মায়াবী মুদ্রার তালে তালে নেচে ওঠে হলভর্তি দর্শক-শ্রোতার মন। কত্থকের মায়াজালে আরও দুই দিন নৃত্য উপভোগ করবে রাজধানীবাসী।
আয়োজকরা জানান, দ্বিতীয়বারের মতো সারাদেশের কত্থক নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ বছর জাতীয় পর্যায়ে সারাদেশ থেকে নৃত্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করে। অনুষ্ঠানে নৃত্যগুরু গোলাম মোস্তফা খানকে জীনাত জাহান স্মৃতি সম্মাননা পদক ক্রেস্ট তুলে দেন সেলিনা হোসেন।
পদক পেয়ে গোলাম মোস্তফা খান বলেন, আমাকে সম্মাননা জানানোর জন্য কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়কে কৃতজ্ঞতা। তারা যে উৎসবের আয়োজন করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
সেলিনা হোসেন বলেন, এ উৎসবে নবীন শিল্পীদের সুযোগ দেওয়ায় আমি আনন্দিত। শিল্পের সাধনার ভিতর দিয়ে নিজেদের তৈরি করাই আমাদের স্বপ্ন। মন্দিরের সেবাদাসীদের পরিবেশিত নৃত্যকে শিল্পমণ্ডিত করেই কত্থক মহিমান্বিত হয়েছে, এগিয়েছে বহু পথ। সত্য, সুন্দর ও সাধনায় নন্দিত হোক এ উৎসব।
উৎসবের উদ্বোধনী দিনে পরিবেশিত হয় ১০টি নৃত্য। শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন সাজু আহমেদ, ইমন, নীল, জ্যোতি ও ত্বাত্তিকা। মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় একক নৃত্য পরিবেশন করেন অপরাজিতা মুস্তফা। এছাড়া অন্য পরিবেশনগুলো সবই ছিল দলীয়। প্রতিটি পরিবেশনা শেষে তুমুল করতালি ও হর্ষধ্বনিতে শিল্পীদের অভিনন্দিত করেন দর্শক-শ্রোতারা।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়দিন বুধবার বিকাল ৩টায় কত্থক নৃত্যবিষয়ক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন শেখ মেহেদী হাসান। বক্তব্য দেবেন সারোয়ার আলী, শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেজোয়ান আলী ও সাজু আহমেদ। সন্ধ্যায় রয়েছে ‘কত্থক গীতমালিকা’ শীর্ষক নৃত্য পরিবেশনা। বৃহস্পতিবার শেষ দিন সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা ও নৃত্যানুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, কত্থক ভারতের লক্ষনৌ, উত্তর ভারত ও জয়পুর অঞ্চলের নৃত্য।
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩)