চার্লি চ্যাপলিন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিখ্যাত অভিনেতা, প্রযোজক, সঙ্গীতজ্ঞ ও চলচ্চিত্রকার চার্লি চ্যাপলিন সুইজারল্যান্ডের কার্সিয়ারে ১৯৭৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার পুরো নাম স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র। বিশ্বের প্রভাবশালী চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনি অন্যতম।
চ্যাপলিনের জন্ম সাল ১৮৮৯ নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন ফিল্মের জন্য ক্যামেরা আবিষ্কার করেন। একই বছর অস্ট্রিয়ায় জন্ম নিলেন হিটলার। সে বছরই আরেক শিশু জন্ম নেয়, যে কিনা পৃথিবীর মানুষকে হাসাতে হাসাতে লুটোপুটি খাইয়ে ইতিহাসের সেরা কৌতুক অভিনেতা ও নির্মাতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সেই মানুষ ‘চার্লি চ্যাপলিন’ নামেই বিশ্ব চলচ্চিত্র ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।
স্যার চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন ১৮৮৯ সালের ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার জন্মস্থান লন্ডন না ফ্রান্স- তা রহস্যঘেরা। মা হান্নাহ চ্যাপলিন ও ভাই সিডনির সঙ্গে দক্ষিণ লন্ডনের বার্লো স্ট্রিটে বেড়ে ওঠেন তিনি। অল্প বয়সেই তার বাবার সঙ্গে তার মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। চ্যাপলিনের শৈশব কাটে প্রচণ্ড দারিদ্র আর কষ্টের মাঝে।
তার মা-বাবা দুজনেই মঞ্চের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। তাই এ পেশাতে আসাটাই তার কাছে সহজ ছিল। চ্যাপলিন সেসময়ের জনপ্রিয় লোকদল ‘জ্যাকসন্স এইট ল্যাঙ্কাসায়ার ল্যাডস’ এর সদস্য হিসেবে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৪ বছর বয়সে তিনি উইলিয়াম জিলেট অভিনীত শার্লক হোমস নাটকে কাগজওয়ালা বিলির চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সুবাদে তিনি ব্রিটেনের নানা প্রদেশে ভ্রমণ করেন ও অভিনেতা হিসেবে তার সম্ভাবনা সবাইকে জানিয়ে দেন।
১৯১৪ সালে ‘মেকিং এ লিভিং’ ও ‘কট ইন দ্য রেইন’ নামে দুটি ছবিতে কাজ করেন। তবে ১৯২১ সালে ৩২ বছর বয়সে ‘দ্য কিড’ ছবিতে অভিনয় তাকে খ্যাতির চূঁড়ায় নিয়ে যায়। ‘দ্য কিড’ ছবির গল্পটিও তারই লেখা ছিল।
নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের অন্যতম মৌলিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব চ্যাপলিনকে চলচ্চিত্রের পর্দায় শ্রেষ্ঠতম মুকাভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতাদের একজন বলেও মনে করা হয়। তার বিখ্যাত কিছু ছবির নাম হলো- ‘মর্ডান টাইমস’, ‘সিটি লাইট’, ‘দ্য গ্রেট ডিকটেটর’, ‘দ্য গোল্ড রাশ’, ‘দ্য কিড’, ‘লাইম লাইট’, ‘দ্য ইমিগ্র্যান্ট’, ‘দ্য সার্কাস’, ‘মনসিওর ভারডক্স’, ‘এ ডগ লাইফ’ ইত্যাদি।
তিনি জীবনে অনেক সন্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া নাইট উপাধি ও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানজনক ডিগ্রিসহ ফরাসি সরকারে দেওয়া অর্ডার অব দ্য লিজিওন। তিনি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন গ্লোব ও একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসহ অনেক পুরস্কার জিতেন। এছাড়া তার ছয়টি চলচ্চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেস বিশেষভাবে সংগ্রহ করেছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এআইএম/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩)