বিকল্প জোটের আত্মপ্রকাশ বৃহস্পতিবার
সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট : একতরফা নির্বাচন প্রতিরোধ এবং রাজনৈতিক সমঝোতা আনতে বৃহস্পতিবার আত্মপ্রকাশ করবে বিকল্প রাজনৈতিক জোট।
বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্প রাজনৈতিক জোটে থাকছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আব্দুর রব ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। এছাড়া সদ্যগঠিত কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও এ জোটে সম্পৃক্ত হতে পারে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই জোটের ঘোষণা দেওয়া হবে। আর এই ঘোষণা দেবেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন।
গত ১ ডিসেম্বর বি. চৌধুরীর বাসভবনে জোটের কর্মপন্থা ও ঘোষণাপত্র নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর ঘোষণাপত্র তৈরির কাজও শেষ হয়েছে।
জোটসংশ্লিষ্ট নেতাদের দাবি, নতুন জোট একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হলে বিএনপির সঙ্গে আসনভিত্তিক সমঝোতায়ও যেতে পারে তারা। তবে জামায়াত থাকায় সরাসরি ১৮ দলীয় জোটে যাবে না তারা।
জানা গেছে, কাজী জাফর আহমদের এ জোটে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ রয়েছে। জোটের প্রধান কে হবেন- এ প্রশ্নে তার নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য জোটের নেতৃত্ব তাদের হাতে রাখার কথা বলছেন। তাদের যুক্তি, যেহেতু তাদের দল বড় সেহেতু নেতৃত্ব তাদের হাতে থাকা উচিৎ। এ লক্ষ্যে বুধববার দুপুরে কাজী জাফরের গুলশানের বাস ভবনে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্যদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এ বিষয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমাদের পার্টি বড়। তাই জোট হলে কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বেই হওয়া উচিৎ।’
প্রসঙ্গত, ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশান কার্যালয়ে দেখা করে বিএনপির আন্দোলনে পাশে থাকার নিশ্চয়তা দেন বিকল্পধারার নেতারা। চার সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দলটির মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে কথা দিয়েছি, বিকল্পধারা একদলীয় নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে আমরা ১৮ দলীয় জোটে যাচ্ছি না। আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
বিকল্প জোটের বিষয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অনেক কিছুই তো ঘটতে পারে। জনগণ দুই দলের ওপর বিরক্ত। আশা করি আপনারা অতিদ্রুত নতুন জোটের সংবাদ পাবেন।’
আসম রব বলেন, ‘দুই দলের হাতে দেশ ধ্বংসের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধ করিনি। দেশ ধ্বংস হবে আর আমরা বসে থাকব, তা হবে না। এবার সময় হয়েছে রুখে দাঁড়ানোর। এবার আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। এটাই শেষ সুযোগ।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সরকারি দল যেমন দেশ চালাতে ব্যর্থ, বিরোধী দলও তেমনি তাদের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ। আমরা জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। জনগণ বিকল্প শক্তির দিকে তাকিয়ে আছে। তাই জনগণের প্রত্যাশা বিবেচনা করে আমরা বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি উত্থানের চেষ্টা করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘২৬ তারিখ কিছু একটা হবে। দেখা যাক কী হয়।’
তবে নতুন জোটে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সিপিবি ও বাসদ থাকছে না।
(দ্য রিপোর্ট/সাআ/এআইএম/এমএআর/শাহ/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩)