গণতন্ত্রের অভিযাত্রা নয় ‘ধ্বংসযাত্রা’ : তথ্যমন্ত্রী
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিরোধী দলের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচিকে ‘ধ্বংসযাত্রা’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ২৪ ডিসেম্বর স্থগিত হওয়া হেফাজতে ইসলামের ‘ঢাকা চলো’র ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি ধার করে বিরোধী দল ঢাকামুখী গণতন্ত্রের অভিযাত্রা ঘোষণা করেছেন। এ কর্মসূচিকে গণতন্ত্রের অভিযাত্রার বদলে ‘ধ্বংসযাত্রা’ কর্মসূচি বলে চিহ্নিত করছি।
২৪ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে একদলীয় নির্বাচন প্রতিহত ও গণতন্ত্র রক্ষায় ২৯ ডিসেম্বর রবিবার ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিরোধী দল এ কর্মসূচির নাম দিয়েছে `মার্চ ফর ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্রের অভিযাত্রা)'।
সরকার এ কর্মসূচি পালন করতে দেবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ধ্বংসযাত্রার কোন কর্মসূচি বাংলাদেশের কোন প্রশাসন হতে দিতে পারে না।
এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে বলে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জানানোর পরও কেন এটাকে ‘ধ্বংসযাত্রা’ বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, এজন্য বলা হচ্ছে যে, সম্প্রতিকালে প্রত্যেকটি কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি (খালেদা জিয়া) ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন। সমাবেশ থেকে আশেপাশের দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা অহরহই ঘটছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পাওয়া এই মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এই মুহুর্তে নির্বাচন আটকানোর কোন কর্মসূচি অগণতান্ত্রিক কর্মসূচি। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদক্ষেপ নেবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নাশকতা, অন্তর্ঘাত সন্ত্রাস প্রশাসনিকভাবে মোকাবেলা ও নাশকতার সঙ্গে রাজনীতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া এ ‘ধ্বংসযাত্রা’ কর্মসূচি উত্থাপনের মাধ্যমে আরো একটি অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিলেন। চলমান নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল ও আটকানোর জন্য বিরোধীদলীয় নেতা ২৯ ডিসেম্বর ধ্বংসযাত্রা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন।
২৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াকে কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইনু বলেন, এখনো দেরি আছে। দেখি ধ্বংসযাত্রার কতটা প্রস্তুতি নেয় তারা। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব দিলে খুশি হতেন জানিয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, আশা করবো তিনি এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে আলোচনার পথে ফিরে আসবেন।
২৪ ডিসেম্বর বিরোধীদলীয় নেত্রীর সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে ইনু বলেন, তিনি কোন রাজনৈতিক প্রস্তাব দেননি। আলোচনার জন্য নির্দলীয় সরকারের কোন রূপরেখাও তুলে ধরেননি। তিনি পুরনো অবস্থানেই আছেন। বিরোধীদলীয় নেত্রী ইনিয়ে-বিনিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধীতা করেছেন। আমি এর নিন্দা জানাই।
মন্ত্রী আরো বলেন, সম্প্রতি সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে হত্যা, সহিংসতার ঘটনা ঘটছে এ বিষয়েও একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি বেগম জিয়া।
বিরোধীদলীয় নেতার নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবি অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটা ফায়সালা করার অনেক সময় ছিলো, তখন তিনি কোন প্রস্তাব দেননি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য বেগম জিয়া যে কমিটির গঠনের আহ্বান জানানোর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধী, সন্ত্রাসী, অগ্নিসংযোগকারী ও জামায়াতী সন্ত্রাসীদের রক্ষার কমিটি গঠনের অপপ্রায়াসে লিপ্ত হয়েছেন।
ইনু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে পরিস্কারভাবে সন্ত্রাসের দায়িত্ব নিতে হবে। সকল সহিংসতার দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তার নেতৃত্বে এ সব হচ্ছে। তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন- জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আগামীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নয় দাবি করে মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এ নির্বাচন।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এসবি/ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩)