খালেদা জিয়ারও বিচার হবে : প্রধানমন্ত্রী
ফরিদপুর সংবাদদাতা : হরতাল-অবরোধের নামে দেশব্যাপী মানুষ হত্যার ঘটনায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে তার বিচার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিনে ফরিদপুরের জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না এসে আন্দোলনের নামে হরতাল-আবরোধ দিয়ে দেশে যত মানুষ হত্যা করা হয়েছে তার জন্য বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হবে। তারও বিচার করবে এ সরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছে। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদরদের বিচার শুরু করেছে। ক্ষমতায় আসলে আগামীতে সব হত্যার বিচার করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে এ সরকার দেশে অনেক উন্নয়ন করেছে। বিরোধী দল সব ভালো কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে। এ সরকারের একটি বড় উদ্যোগ পদ্মা সেতু নির্মাণেও বাধা সৃষ্টি করেছে তারা। দুর্নীতির নামে সেতুর কাজ বন্ধ করেছে।’
তিনি ভাঙ্গার বিদ্রোহী প্রার্থীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা আজ আমার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট চাচ্ছে। আমি ভাঙ্গাবাসীকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমার দুই বোন ও আমাদের ছেলে-সন্তানদের বাইরে আমার আর কোনো আত্মীয় নাই। বঙ্গবন্ধুর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে যারা দেশে দুর্নীতি করছে তারা আমার আত্মীয় হতে পারে না।’
ফরিদপুর ৪ আসনে (ভাঙ্গা–সদরপুর-চরভদ্রাসন) আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লার নির্বাচনী প্রচারণা সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা চৌরাস্তার মোড়ে বালুর মাঠে এসে উপস্থিত হন। এ সময় ফরিদপুর জেলা ও ভাঙ্গার আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে স্বাগত জানান। বালুর মাঠ জনসভা এ সময় জনতার ভিড়ে কানায় কানায় পুর্ণ হয়ে যায়।
জনসভায় ভাঙ্গাবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে যে উন্নয়ন করেছে তা আর কোনো সরকার করে নাই। এ সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। শিক্ষার উন্নতি হয়েছে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ফ্রি বই বিতরণ করা হচ্ছে। ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জে বেকারদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভাঙ্গাবাসী যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জয়যুক্ত করে তবে ভাঙ্গাকে আগামীতে একটি আধুনিক উপজেলায় রূপান্তর করা হবে।’
ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী হেদায়েত উল্লা সাকলাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রমমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় সভামঞ্চে আরো উপস্থিত ছিনেল সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, বোয়ালমারীর এমপি আব্দুর রহমান, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এস এম নুরুন্নবী, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জায়নুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ভাঙ্গার জনসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী সদরপুর উপজেলার স্টেডিয়াম মাঠে একই নির্বাচনী জনসভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
(দ্য রিপোর্ট/এসএইচ/এসকে/ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩)