সরকারের মাথা বিগড়ে গেছে : ফখরুল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করতে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ ঘোষণা করেছেন খালেদা জিয়া। কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই সরকারের মাথা বিগড়ে গেছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র সফলতা আঁচ করতে পেরেই সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে যে কোনো উপায়ে বাধাগ্রস্ত ও ভণ্ডুল করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে কর্মসূচি ঘোষণার রাত থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ও গুলশানে অবস্থিত রাজনৈতিক কার্যালয় অবরুদ্ধ এবং নেতাকর্মীদেরকে সেখানে আসা-যাওয়াতে বাধা প্রদান করছে। পাশাপাশি সারাদেশে যৌথ বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগে গ্রেফতার-হয়রানি করার এক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি দলীয় সাংসদ শাম্মী আখতার এবং সাবেক সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলসহ ৪ জন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবারও চেয়ারপারসনের বাসভবন ও গুলশান কার্যালয় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। বিএনপির নয়াপল্টনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যালয় গত তিন মাস থেকেই অবরুদ্ধ করে রেখেছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার। অন্যদিকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করার অভিপ্রায়ে সংবাদপত্র ও মিডিয়াকর্মীদের ওপর অঘোষিত সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে যাতে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কোন কর্মসূচির বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জনগণ জানতে না পারে সে ব্যবস্থাও শুরু করেছে সরকার।’
সরকারের এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আরও বলেন, ‘দেশ শাসনে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে যাওয়ার ঘটনা জনগণ জানতে পারা, জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় নেমে আসা, নিজেদের অভ্যন্তরীণ হানাহানি এবং রক্তারক্তির হোলিখেলায় বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং প্রহসনের নির্বাচনকে সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বন্ধ করার পাঁয়তারা ও যৌথ বাহিনী দিয়ে সারাদেশে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলায় জড়ানো, গ্রেফতার ও নির্যাতন-নিপীড়নের এক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছে। তারা এ খেলায় মেতে ওঠার কারণ হলো বিরোধী দল যেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন করতে নিরুৎসাহিত ও ভয় পায়। শাসক দলের দুষ্কর্মের অংশ হিসেবেই যৌথ বাহিনী দিয়ে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার ও রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করার সরকারি অপচেষ্টা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে গণআন্দোলন সৃষ্টি করে সরকারের এহেন অপকর্মের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার সবদিক থেকে ধরাশায়ী বলেই তারা কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতারের নামে পর্যুদস্ত করার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু সরকারের এই অপচেষ্টা দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ কখনোই সফল হতে দিবে না।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘অবিলম্বে সারাদেশে যৌথ বাহিনী দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার ও নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করুন। জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের পথে আসুন, দেশকে সংঘাত ও নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত না করে শান্তির পথে আসুন। অন্যথায় জনগণ তাদের দাবি আদায়ে অতীতের মতোই ঐক্যবদ্ধভাবে গণদাবি মেনে নিতে আপনাদেরকে বাধ্য করবে।’
(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এমসি/লতিফ/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩)