প্রতিবছরের মতো এবার আর ইংরেজি বর্ষ (থার্টিফাস্ট নাইট) বরণ ঢাক-ঢোল বাজিয়ে করতে পারছে না জনগণ। সাদামাটাভাবেই নতুন বছর ২০১৪ সালকে বরণ করতে হবে।

এ ছাড়া নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হবে চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তাবলয়। সম্প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতা ও সারাদেশের নাশকতার বিষয় বিবেচনা করে আরো নিরাপত্তার বিশেষ নির্দেশনা আসছে।

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, প্রতিবছরের মত এবার ইংরেজি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করার জন্য জনসাধারণের চলাচল উন্মুক্ত করা যাবে না। বেশি রাত পর্যন্ত জনগণের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে। কমিশনার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ নির্দেশনা দিবেন।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, থার্টিফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাজধানীর অভিজাত বিশেষ কয়েকটি এলাকার ২০টি স্থানকে স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করছে ডিএমপি। উচ্ছৃঙ্খলতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে নগরীর ৮টি ক্রাইম ডিভিশনকে ৮টি সেক্টর হিসেবে চিহ্নিত করে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ওই সকল এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলবে পুলিশ। রাত ৮টার পর স্পর্শকাতর এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ ছাড়া নগরীর ৯০টি পয়েন্টকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করে ওইসব এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। ওইসব এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাবের অতিরিক্ত নজরদারির পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড, অশ্বারোহী বাহিনী, কমান্ড ভেহিকেল (রায়ট কন্ট্রোল কার), জল কামান, অগ্নিনির্বাপক গাড়ি (ফায়ার টেন্ডার) ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, থার্টিফার্স্ট নাইটে ধানমণ্ডির বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখ, শাহবাগ ক্রসিং, দোয়েল চত্বর, চানখারপুল, জগন্নাথ হল ক্রসিং, টিএসসি, পলাশী, নীলক্ষেত ক্রসিং, ঢাকা কলেজ গেট, ব্রিটিশ কাউন্সিল, চারুকলা, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, আণবিক শক্তি কমিশন, দোয়েল চত্বর ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের সামনে থাকবে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। এ ছাড়াও কন্ট্রোলরুমে যেকোন পরিস্থিতির জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা রাখা হবে। তাই ওসব স্থানে জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ডিএমপি সূত্র জানায়, রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধেই শান্তিতে নেই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এর মধ্যে আবার ৩১ ডিসেম্বর রাতের ঝামেলা নিতে চাচ্ছে না তারা। ফলে যেকোন ধরনের নাশকতা, উচ্ছৃঙ্খলতা ঠেকাতে তারা তৎপর। থার্টিফার্স্ট নাইটে উচ্ছৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহম্মেদ মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্দেশনাগুলো দিবেন।

রাজধানীর ৮টি ক্রাইম জোনের উপ-কমিশনাররা (ডিসি) সংশ্লিষ্ট জোনের থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে ডিএমপি’র নেওয়া এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করবেন। ডিএমপি সদর দফতরের মনিটরিং সেল পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে বলে সূত্র জানায়।

(দ্য রিপোর্ট/এনইউডি/এসবি/নূরুল/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩)