সৈয়দ শামসুল হক ও তার কবিতার ভূগোল
সাহসের সুকোমল কোলাজ
মিরাজ মোহাইমেন
আজ আচমকা দ্বিপ্রহরে পড়ছিলাম একালের এক বড় কবি মলয় রায়চৌধুরীর কবিতার বই ‘যা লাগবে বলবেন’। বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠা পড়তে গিয়ে আটকে গেল চোখ। কবি লিখছেন, ‘রেশনের দোকানে দুচার কথা’। বলা শুরু হল এভাবে- আপনার হয়তো মনে আছে, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে, দূরদর্শনে সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাংলা কবিতা মধুসূদন দত্ত থেকে রবীন্দ্রনাথ তারপর জীবনানন্দ হয়ে শক্তিতে পৌঁছেছে।
শক্তিদা নিজেও, যখন তিনি জানিয়েছিলেন, ‘যেকোনো লেখকের পদ্যই দীর্ঘকাব্য | তিনি লেখেন টুকরো টুকরো করে এইমাত্র’, -তখন উনিও, ইতিহাসের রৈখিকতাকে মেনে নিয়েছিলেন। সময়ের এই মহাআখ্যানবাদী ধারণাটি সেমেটিক ও ঔপনিবেশিক। একটি কাল খণ্ডে নানান রকম হাজার-হাজার সোজা-বাঁকা রেখা বিভিন্ন দিকে দৌড়ায়। ওঁদের দোষ নেই। আজ অব্দি এ রকমই বোঝাবার চেষ্টা হয়েছে, ইতিহাস এগিয়ে চলেছে প্রগতির দিকে, উত্তরণের দিকে, সর্বজনীনতার দিকে। মানুষ হয়ে উঠছে আলোকপ্রাপ্ত, যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী ইত্যাদি। মানুষ সুসভ্য হয়ে চলেছে, লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছে। কবিতাও এগিয়ে চলেছে, আরও, আরও জোরে।... পড়া শেষ করার আগেই চোখ আটকে গেল সৈয়দ শামসুল হক-এ। এ হল নিয়তি।
মনের উচাটন আমাকে নিয়ে গেল তাঁর দিকে, তাঁর কবিতার দিকে। তাঁকে আমার মনে হয় আমাদের তারুণ্যের সুকোমল ছায়া, অথবা তিনি আমাদের সাহসের এক চির নবীন সহিস, তিনি চলিতেছেন, অনেক-অনেক সমুখের পানে। এই আমি তাকে নিয়ে গদ্য লিখতে গিয়ে আটকে গেলাম আত্মজৈবনিক কবিতা ‘আমার পরিচয়’-এ। সৈয়দ হকের শৈল্পিক ভুবন কিংবা তাঁর মানস গঠন তৈরি হয়েছে কীভাবে, তাঁর কবিতার ভূগোলটা কী বোঝার জন্য-এ কবিতাটি যথোপযুক্ত। পাঠকের সামনে এটি উদ্ধৃত করার লোভ সামাল দেওয়া ভারি মুশকিল। তার লেখা-লেখির ভূগোলটা এত বড়, পাঠক মাত্রই চাইবেন তাঁর স্বরচনার থেকে, তার বয়ানের চাবি-কাঠিটাকে সমঝে নিতে। আত্মমগ্নতার গভীর অন্তর্দেশ থেকে গড়ে উঠেছে তাঁর পঙক্তির বুনন। সব্যসাচী লেখক হিসেবে প্রতিপন্ন করার আগে-ভাগে তিনি সবার পহেলায় নিজেকে কবি নামে গণ্য করতে চাহেন। যে কারণে বলেন, কবিতাই হল আমার লেখালেখির নাভি। মূল কেন্দ্র পরে তা ছড়িয়েছে অন্য শাখায়। এর মধ্যদিয়ে জীবনকে দেখার ভঙ্গি, ব্যাখ্যার নিজস্ব ভাষা তৈরি করতে চেয়েছি। আমাদের শ্রদ্ধেয় হক মিয়া যে কাণ্ডটা ঘটাইয়াছেন তাহা আর কিছু নহে, তাহা হইতেছে, সৃজনশীলতার সব শাখায় সৈয়দ শামসুল হকের অবাধ চলন। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, চিত্রকলা, সঙ্গীত, অনুবাদ, সমালোচনাসহ সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তিনি বিচরণ করছেন বীরদর্পে। নতুন প্রকাশভঙ্গির বাসনায় তিনি চষে বেড়ান সাহিত্যের প্রতিটি শাখা-প্রশাখা।
সৈয়দ হক-এ পরিক্রমণ : রফিকউল্লাহ খান সাহেবের আছর নিয়ে এ কথা লিখতে হচ্ছে, ধুলোর বাউল থেকে সমগ্র মানব হয়ে উঠার অন্তরিত ইতিহাসের দিক থেকে বিচার করলে সৈয়দ শামসুল হক মূলত কবি। ‘মূলত কবি’? কাব্য-নাটক শব্দবন্ধটি যোগ করলে সমালোচকের অবস্থানটা আরও নিরাপদ হয়। কেননা সমালোচকরা খোঁজেন ভারসাম্যপূর্ণ নিরাপত্তা। কিন্তু কাব্যনাটক ও নাটক। নাটক লেখককে ব্যক্তির জগৎ থেকে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হয়। সেখানে চরিত্র-বৈচিত্র্য ও সংলাপ-বৈচিত্র্যের বাইরেও থাকে দর্শক-শ্রোতা। আমার প্রশ্ন, সৈয়দ শামসুল হক মূলত কবি? তাহলে গল্প, উপন্যাস ও নাটকে তিনি কি গৌণ? রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি এই অর্থে যে, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। ভক্তরা বলেছেন ‘কবিগুরু’। এতে সমকালে রবীন্দ্র-মূল্যায়নে সমস্যা হয়েছে। বুদ্ধদেব বসু অনেকের মতে আধুনিক কবিদের শিক্ষক। কিন্তু তাকেও মূলত কবি বললে তার মননচর্চার ঋদ্ধ ইতিহাসই কেবল নয়, গল্প, উপন্যাস ও কাব্যনাটকের স্বতন্ত্র পথদ্রষ্টা হিসেবে অবমূল্যায়ন করা হয়। সৈয়দ শামসুল হক মূলত এবং প্রধানত শিল্পী। কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসকি, নাট্যকার- সবগুলোই। তবে কবির চেতনাস্রোত সাহিত্যের অন্যান্য রূপের সাধনাকে যে সমৃদ্ধ ও প্রাণময় করে তোলে, রবীন্দ্রনাথ ও বুদ্ধদেবের মতো তাঁর ক্ষেত্রেও এ মন্তব্য প্রযোজ্য। বাংলা ভাষার জীবিত লেখকদের মধ্যে এখনও তিনি র্সবগ্রাসী।
সাহিত্যের সৃজনশীল অন্যান্য শাখার মতো তাঁর কবিতা এখনও সংবদেনশীল পাঠককে আলোড়িত করে। কবিতায় বিধৃত তাঁর ব্যক্তিচেতনার পর্যায়ক্রম অনেক সময় অতিক্রম করে যায় সময়ের স্বভাব ও নান্দনিক রুচি। যে কারণে, তাঁর কবিতার পঠন ও মূল্যায়ন কখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি।
সৈয়দ শামসুল হকের কাব্যযাত্রার সূচনায় নিসর্গমগ্ন এক তরুণের দেখা পাওয়া যায়। যেন ধুলোমলিন এক গ্রামীণ বাউল নাগরিক বৈদগ্ধ ও ব্যক্তিমুখী চেতনার রন্ধ্র দিয়ে স্মৃতিলোকের ক্রমভগ্ন নিসর্গলোক প্রত্যক্ষ করছে। নিসর্গমগ্নতা নির্জনতম মানুষকেও যে পূর্ণতার আনন্দ দেয়, জীবনানন্দ দাশের কবিতা তার প্রমাণ। কিন্তু সৈয়দ শামসুল হক জীবনানন্দীয় আবহের কবি নন, বরং মননশীলতা ও মিতকথন বৈশিষ্ট্য যে সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কবিতার ধাঁচ তার মধ্যে কখনও কখনও লক্ষ্য করা যায় তার প্রথম পর্যায়ের কবিতায়।
তার কবিতা পাঠের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, তিনি বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় কবিতা থেকেই আত্ম-উন্মোচন ও আত্মপ্রকাশের প্রাথমিক পাঠ নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে মিশে ছিল তাঁর ব্যক্তি সংবেদনার স্বতন্ত্র গড়ন। এই পাঠকৃতি ও মানসক্রিয়া তাঁর নিজের ও বাংলা কবিতার জন্য যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছিল। ‘একদা এক রাজ্যে’র , (১৯৬১) ‘বুনোবৃষ্টির গান’, ‘কবিতার উন্মোচনী অংশের চিত্র ও ধ্বনির অন্তরালে ভিন্ন এক কবিকণ্ঠের দেখা পাই :
‘বৃষ্টি এসে ভেজায় কখন নাগেশ্বরীর মাঠ
দূরত্ব এক বাতাস নাড়ে বুনো চালতা ফল
হৃদয় যেন।’
ব্যক্তিমন ও ভূগোলের দ্বৈরথে তৃতীয় কারও অনুপ্রবেশটাও নাগরিক রহস্যের স্পর্শে দ্বিধা থরথর :
‘ইচ্ছা আছে মেঘের মতো অন্ধ সীমানায়
একলা এক জানালা খোলা বাংলাবাড়ির ঘর
একলা এই রঙ্গপুরে হঠাৎ কি যে হয়।
পাব না জানি তোমায় পেলে হৃদয় দেখা যায়।
বৃষ্টি এসে ভেজায় আবার সেই দুরাশার মাঠ।’
‘খঞ্জনি’ কবিতায়ও দেখি ধ্বনি ও চিত্রের মধ্যে মৃন্ময় এক অনুভূতিলোক, সেখানেও ব্যাপ্ত সমগ্র- বাংলার অন্তরিত মানচিত্র : ‘আকাশে উদাসী মেঘ, মর্ত্যে তুমি বাজাও খঞ্জনি;/ ধুলোর বাউল তুমি, তাকে তুমি ব্যাপ্ত করে আছ।/ নিজের আড়াল আর কামরাঙা ছায়া,/ সেখানে দাঁড়াও এসে।’ ‘বুনোবৃষ্টির গান’(১৯৫৯) থেকে ‘অধোগামী দিনের পঞ্জিকা’ (’৯৮)-এই র্দীঘ কাব্যযাত্রায় সময়স্বভাবের সবগুলো স্তরকেই কবি র্স্পশ করেছেন। সেই সঙ্গে নিজের সৃষ্টিসত্তাকেও সময়ের দ্বন্দ্ব ও জঙ্গমের অগ্নি-পরীক্ষায় যাঁচাই করে নিয়েছেন। নির্সগলগ্ন চেতনা কীভাবে সমষ্টিবিচ্ছিন্ন ব্যক্তির আত্মরতি ও বিকারের জগতে প্রবেশ করে, কীভাবে রক্তিম অনুভূতিপুঞ্জের মধ্যদিয়ে ব্যক্তি সচেতনভাবে সমষ্টিলগ্ন হয়; অতঃপর সমাজ রাজনীতি, ইতিহাস ও সভ্যতা-ভাবনা কবিতার শিল্পশীলিত অবয়বে রূপ পায়, সৈয়দ হকের কবিতা তার প্রমাণ। ‘বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা’ (১৯৬৯) শব্দপ্রবাহের নায়কের স্বগতোক্তির এই প্রকাশ ভঙ্গিও অভিনব বাংলা কবিতায়।
‘আবার উঠব জেগে খরচৈত্রের চর
হয়ে তোমার পদ্মায়। পিঙ্গল জটায়
স্রোতের প্রপাত নিয়ে হেঁটে যাব আমি,
স্মৃতির সাগরে। জন্মে জন্মে বারবার
কবি হয়ে ফিরে আসব আমি বাংলায়।’
ব্যক্তির পূর্ণায়ত ভূগোলকে একমাত্র কবিতাই তার বহুস্বরসহ ধারণ করতে পারে। চৈতন্যবিবর্তনের অকপট সত্য সেখানে বিধৃত হয়। সৈয়দ শামসুল হকের মধ্যবিত্ত নাগরিক-মনের বিবর্তনের ধারায় বাঙালি জীবনের ক্রমায়ত যাত্রার যে শব্দ-বর্ণ-ধ্বনি ও চিত্রময় স্বরূপ দেখি, তা নিঃসন্দেহে তাৎর্পযর্পূণ। বিশেষ করে, ‘পরানের গহীন ভিতর’ (১৯৮০) কাব্যগ্রন্থ থেকে তাঁর কবিতার বিষয়ের লোকব্যঞ্জনা আঙ্গিকের নতুনত্বে পাঠককে নতুন অভিরুচির দীক্ষা দিয়েছে। কবি তাঁর আত্মশনাক্তকরণ ও জীবনসন্ধানের নতুন যাত্রা এভাবেই শুরু করেন :
‘কি কামে মানুষ দ্যাখে মানুষের বুকের ভিতরে
নীল এক আসমান-তার তলে যমুনার ঢল,
যখন সে দ্যাখে তার পরানের গহীন শিকড়ে
এমন কঠিন টান আচানক পড়ে সে চঞ্চল?
কিসের সন্ধান করে মানুষের ভিতরে মানুষ?’
(পরানের গহীন ভিতর-১৪)
এই জিজ্ঞাসাধ্বনির মধ্যেই থেমে যেতে পারেন একজন কবি। অথবা এগিয়ে যেতে পারেন অনন্তকালের পথ ধরে। কেননা, মানবসন্ধানের মধ্যদিয়ে শিল্পীর আত্মসন্ধান ও আত্মজিজ্ঞাসার এই প্রক্রিয়া মহৎ কবিতার চিরকালের স্বভাবধর্ম।
যবনিকা : এতক্ষণে ভদ্র পাঠকগণ ঋণ শুধালাম। আমি তার অর্ধেক বয়সী। সৈয়দ হকের জন্য অবারিত দরদী মন এ কথা সায় দিতে চেয়েছিল তাকে বোঝার জন্য আত্মপরিচয় কবিতাটিই যথেষ্ট যা থেকে তরুণগণ বিবিধ চিন্তাস্রোত ধারণ করতে পারেন। একইভাবে এ কথাও প্রযোজনা করতে চাহি, তিনি কাব্যকলার সুষম নিয়ম-কানুন মানিয়া নতুন রাস্তা তৈয়ার করিয়াছেন। যে কারণে আমরা তাকে কবুল করিয়াছি। আমাদের আরেকজন রহিয়াছেন যাহার নাম- আল মাহমুদ। তাহারা চলিয়া গেলে আমাদের কী হইবে?
ভাবিয়া কূলকিনারা করিতে পারি না, মাঝে মাঝে এই বেদনার তরীতে চড়িয়া স্রোতের উজানে উঠিয়া ভাবি- আমরা সেই তরুণদের জন্য অপেক্ষা করিতেছি যাহারা লংকাকাণ্ড ঘটাইবেন। বাংলা কবিতাকে বহুদূর লইয়া যাইবেন। সে যাহাই হোক এই প্রত্যাশার তীরে আসিয়া এখন আপনাদের সৈয়দ হকের মানস গঠন বুঝিবার জন্য উদ্ধার করিতেছি তাহার আলোচিত কবিতাটি। তাহা হইলে একবার পড়িয়া ঠাউর করিয়া নিন তাহার চিন্তার মানচিত্র তথা ভূগোলখানি। তিনি লিখিতেছেন, ‘আমার পরিচয়’ নামক কবিতায় :
“আমি জন্মেছি বাংলায়
আমি বাংলায় কথা বলি।
আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।
চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।
তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে?
আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে
আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে।
আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে
আমি তো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলার থেকে।
এসেছি বাঙালি পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার থেকে
এসেছি বাঙালি জোড়বাংলার মন্দির বেদি থেকে।
এসেছি বাঙালি বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ থেকে
এসেছি বাঙালি আউল-বাউল মাটির দেউল থেকে।
আমি তো এসেছি সার্বভৌম বারোভূঁইয়ার থেকে
আমি তো এসেছি ‘কমলার দীঘি’ ‘মহুয়ার পালা’ থেকে।
আমি তো এসেছি তিতুমীর আর হাজী শরীয়ত থেকে
আমি তো এসেছি গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণার থেকে।
এসেছি বাঙালি ক্ষুদিরাম আর সূর্যসেনের থেকে
এসেছি বাঙালি জয়নুল আর অবনঠাকুর থেকে।
এসেছি বাঙালি রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে
এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে।
আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে
আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে।
এসেছি আমার পেছনে হাজার চরণচিহ্ন ফেলে
শুধাও আমাকে ‘এতদূর তুমি কোন প্রেরণায় এলে?
তবে তুমি বুঝি বাঙালি জাতির ইতিহাস শোনো নাই-
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’
একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি, আজো একসাথে থাকবোই
সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবোই।
পরিচয়ে আমি বাঙালি, আমার আছে ইতিহাস গর্বের-
কখনোই ভয় করিনাকো আমি উদ্যত কোনো খড়গের।
শত্রুর সাথে লড়াই করেছি, স্বপ্নের সাথে বাস;
অস্ত্রেও শান দিয়েছি যেমন শস্য করেছি চাষ;
একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পরেছি ফাঁস;
আপোষ করিনি কখনোই আমি- এই হ’লো ইতিহাস।
এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান?
যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান;
তারই ইতিহাস প্রেরণায় আমি বাংলায় পথ চলি-
চোখে নীলাকাশ, বুকে বিশ্বাস পায়ে ঊর্বর পলি।”
লেখক : প্রাবন্ধিক