নিরানব্বইয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের শিল্পকলার অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ শিল্পীর জন্ম ১৯১৪ সালে কিশোরগঞ্জে। জয়নুলের বেড়ে ওঠা ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। শৈশবেই তিনি পরিচিত হন নদী ও প্রকৃতির রূপ-রঙের সঙ্গে। নদীর সংস্পর্শে বেড়ে ওঠার কারণেই হয়তো তার ভেতরে প্রকৃতি ও মানুষের ছাপ দেখা যায়। নদী পাড়ের মানুষ, প্রকৃতি ও সাঁওতাল রমণীর অপরূপ রূপের গভীরতা পাওয়া যায় তার কাজে।
১৯৩৩ সালে কলকাতা সরকারি আর্ট স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে পাঁচ বছর পড়াশোনা করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি আর্ট স্কুল অনুষদে যোগ দেন। দুর্ভিক্ষ জয়নুলের চিত্রে এক অনন্য ভাষা হিসেবে ধরা দেয়। ৪৩ সালের মন্বন্তর জয়নুলের ছবিতে বিশেষ প্রভাব ফেলে। তার আঁকা দুর্ভিক্ষের চিত্র দেশ এবং কালকে অতিক্রম করেছে।
১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে জয়নুল আবেদিন ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি ছবি আঁকেন। পরবর্তী সময় তার কাজে নতুন একটি ধারা দেখতে পাওয়া যায়। যার উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ‘দুই রমণী’,‘পাইন্যার মা’, ‘রমণী’ ইত্যাদি।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর প্রতিষ্ঠা করেছেন ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটস। ১৯৪৮ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানের চারুকলা ইনস্টিটিউট। ১৯৭৫ সালে ঢাকার অদূরে সোনারগাঁয়ে একটি লোকশিল্প জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে ভিত্তি করে তিনি ৬৫ ফুট দীর্ঘ স্ক্রল পেইন্টিং আঁকেন। ১৯৭০ সালে আঁকেন তার বিখ্যাত ৩০ ফুট দীর্ঘ ‘মনপুরা’।
বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার প্রকাশই শুধু নয়, তারই হাত ধরে রূপ পেয়েছে এ ধারার স্বকীয়তা। প্রাচ্যের ও পাশ্চাত্যের চিত্রশিল্পের ধারাকে তিনি নিজের মতো করে চর্চা করেছেন। জয়নুলের চিত্রে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সম্মেলনের বিষয়টি স্পষ্ট।
১৯৭৬ সালের ২৮ মে ঢাকায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
(দ্য রিপোর্ট/কেএম/জেএম/ এমডি/ডিসেম্বর ২৮, ২০১৩)