বিএনপির ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অন্যদিকে, বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনের সড়কটি ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওই সড়ক দিয়ে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবনের সামনের রাস্তায় মিডিয়া কর্মী এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের বাইরে দলীয় কোনো কর্মী দেখা যায়নি।

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত শনিবার মধ্যরাত থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

শনিবার গভীর রাতের চিত্র : রাত ৩ টা ৪০ মিনিট দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক টিম বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফকিরাপুল প্রবেশ পথে যায়। এই রাস্তার উভয় লেনে বাঁশ ও প্লাস্টিকের ব্যারিকেড। তিনজন পুলিশ সদস্য পাহারারত। যেকোনো যানবাহন দেখলেই তা সরিয়ে দিচ্ছে। গণমাধ্যমের গাড়িও দাঁড়াতে দিচ্ছে না তারা।

ফকিরাপুল হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, শান্তি নগর, মৌচাক, মগবাজার হয়ে এফডিসি কারওয়ান বাজার পর্যন্ত শুধুই রাস্তা পিক আপ ভ্যান, খালি রিকশা, দুই-একটা সিএনজি অটো রিকশা আর আমদানি পণ্য পরিবহনের ব্যবহৃত বড় আকারের কার্গো ট্রাক চোখে পড়ে। তবে মগবাজার হয়ে রমনা থানা ও ডিএমপি কার্যালয়ের রোডের প্রবেশ পথে পুলিশ ও র‌্যাবের টহল টিম দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজার হয়ে বিজয় সরণী, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী হয়ে কাকলী মোড় পর্যন্ত রাস্তায় বেশ কিছু সিএনজি, প্রাইভেট কার চলাচল করছে। কিছু কিছু পয়েন্টে ঘুমিয়ে থাকা পুলিশ সদস্যের পাহারাও দেখা গেছে।

কাকলী মোড় হয়ে গুলশান-২ গোল চত্বর। রাত সাড়ে ৪টায় গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের বাস ভবন। শুকনা গাছের ডাল আর কাগজে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণ করছেন মিডিয়া কর্মী আর পুলিশ সদস্যরা। সঙ্গে আছেন চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) এর এক কর্মকর্তা। বিরোধীদলীয় নেত্রী বাস ভবনের সামনের রাস্তায় তখনও বালি ট্রাকের ব্যারিকেড উভয় পাশে। বাড়ির সামনে দুটি গাড়ি নিরাপত্তা বাহিনীর। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে আর বাকিরা টহল চৌকিতে ঘুমিয়ে।

সেখান থেকে দ্য রিপোর্ট টিম সোজা আবদুল্লাহপুরের দিকে যায়। যাওয়ার পথে রাস্তায় কয়েকটি পুলিশ ও র‌্যাবের টহল গাড়ি। আবদুল্লাহপুর মোড়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে পান করছেন চা। রাত তখন ৫টার কাছাকাছি।

সাড়ে ৫টার দিকে ঘন কুয়াশার মধ্যে পোষাক শ্রমিকদের পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যাওয়ার ঢল। উত্তরা মাসকট প্লাজার বিপরীত পাশে পুলিশের প্রস্তুতি। সবাইকে প্রস্তুত করছেন এক কর্মকর্তা।

সেখান থেকে বিশ্বরোড হয়ে নর্দ্দা, নতুন বাজার। নতুন বাজার আমেরিকান দূতাবাসের উল্টো পাশে পুলিশের পাহারা। নতুন বাজার হয়ে রামপুরায় এবার ভিন্ন চিত্র। আবুল হোটেলের সামনে প্রায় ৩০-৪০জন পুলিশ সদস্য প্রস্তুত হচ্ছে দায়িত্ব পালনের জন্য।

রামপুরা হয়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভার দিয়ে বাসাবো হয়ে সোজা সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী। যাত্রাবাড়ি থানার সামনে শতাধিক পুলিশ। তাদের বিভিন্ন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। একটি টিমকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো ডেমরা রোডের দিকে, অন্যটা যাত্রাবাড়ি মোড়ে।

যাত্রাবাড়ি থেকে দ্য রিপোর্ট অফিসে ফেরার পথে কমলাপুর হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পুলিশ, র‌্যাবের পাহারা। কিছু পুলিশ সদস্যের একটা জটলা। এগিয়ে দেখা গেল ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে হালুয়া রুটি খাওয়া হচ্ছে।

সেখান থেকে দিলকুশার ‘ক্যাফে দিলকুশা’ রেস্তোরাঁ। একটি পুলিশের গাড়ি। কড়া ভাষায় কি যেন নির্দেশ। সেখানে গিয়ে জানা গেল, খাবার হোটেলটি বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তারা। সকাল তখন সাড়ে ৭টা।

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/বিকে/আইজেকেএল/ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩)