জিপিএ-৫ বেড়েছে ৪ গুণ
জেএসসি-জেডিসি পাসের হার ৮৯.৯৪
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল রবিবার প্রকাশ করা হয়েছে। চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত জেএসসি ও জেডিসিতে এবার সম্মিলিতভাবে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৩৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ১০৯ জন। গত বছরের তুলনায় গড় পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২০১২ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত জেএসসিতে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৭১ ও জেডিসিতে ৯১ দশমিক ১১ শতাংশ। গত বছর জেএসসিতে ৮৬ দশমিক ১১ ও জেডিসিতে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ২০৮ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৯৪২ জন। এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ২৬৬ জন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ বেশি। ঐচ্ছিক বিষয় অন্তর্ভুক্তির কারণে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার বেড়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এবার ঢাকা বোর্ডে সেরা ২০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষ রয়েছে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল। গত কয়েক বছরের সেরা রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবার তৃতীয় অবস্থানে এসেছে। জেডিসিতে মাদ্রাসা বোর্ডে দেশ সেরা হয়েছে উত্তরার তানজীমুল উম্মাহ ক্যাডেট মাদ্রাসা।
সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রবিবার দুপুর ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী সকাল ১০টায় শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের কপি হস্তান্তর করেন।
আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জেএসসিতে অংশগ্রহণ করেছে ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭০০ জন, পাস করেছে ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ও জেডিসিতে অংশগ্রহণ করেছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫১ জন। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে জেএসসিতে এক লাখ ৫২ হাজার ৯৯৭ জন এবং জেডিসিতে ১৯ হাজার ২১১ জন।’
এবারও শীর্ষে বরিশাল বোর্ড
৮ বোর্ডের মধ্যে গত কয়েক বছরের মতো এবারও শীর্ষে রয়েছে বরিশাল বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত বছরের মতো যথারীতি সবার নিচে রয়েছে চট্টগ্রাম বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৯৩, রাজশাহী ৯৩ দশমিক ৮৮, কুমিল্লা ৯০ দশমিক ৪৫, যশোর ৮৯ দশমিক ০৩, সিলেট ৯১ দশমিক ১৫ ও দিনাজপুর ৮৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।
জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে ঢাকা বোর্ড
জিপিএ প্রাপ্তির দিক থেকে বরাবরের মতো সব বোর্ডের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বোর্ড। ঢাকা বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৫ হাজার ২২৩ জন। গতবারের মতো সর্বনিম্নে রয়েছে সিলেট বোর্ড। এ বোর্ডে ৫ হাজার ৭৪৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে ২০ হাজার ৫২৩, কুমিল্লা বোর্ডে ১৬ হাজার ৯৫, যশোর বোর্ডে ১৪ হাজার ৭০৪, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১৪ হাজার ১০৫ ও বরিশাল বোর্ডে ১০ হাজার ৭৬৩ ও দিনাজপুর বোর্ডে ১৫ হাজার ৮৩৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেএসসি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেডিসি পরীক্ষার অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ২টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ই-মেইল/ওয়েব মেইল) এবং এসএমএস এর মাধ্যমে একযোগে প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্র সচিবদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা ফল সংগ্রহ করতে পারবেন।
পরীক্ষার ফল নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করার পাশাপাশি পরীক্ষার্থীরা মোবাইলে এসএসএম, শিক্ষাবোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটের (www.educationboardresults.gov.bd) এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল সংগ্রহ করতে পারবে।
মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমেও ফল পেতে যে কোনো মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে JSC লিখে একটি স্পেস দিয়ে নিজ বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর, রোল নম্বর ও পাসের বছর (২০১৩) লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। মাদ্রাসার ক্ষেত্রে JSC-এর পরিবর্তে JDC লিখতে হবে।
খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে।
এবারও বোর্ডগুলোতে শীর্ষ ২০ প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পাঁচটি মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে নিবন্ধিত প্রার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার পাসের হার, শতকরা পাসের হার, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রতিষ্ঠানের গড় জিপিএ।
প্রসঙ্গত, ৪ নভেম্বর থেকে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও বিরোধী দলের অবরোধের কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। ২০ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অবরোধের কারণে তা শেষ হয় ২২ নভেম্বর।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এনডিএস/ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩)