দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ঐচ্ছিক বিষয় অন্তর্ভুক্তির সুবিধার কারণে সার্বিক ফলের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। রবিবার সচিবালয়ে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ দাবি জানান।

মন্ত্রী বলেন, ঐচ্ছিক বিষয়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। এটি সামগ্রিকভাবে ফলাফলের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এসএসসি ও এইচএসসির পর এখন জেএসসি-জেডিসির ফলাফলে ঐচ্ছিক বিষয় অন্তর্ভুক্তির সুবিধা যুক্ত হলো। এ সুবিধার মাধ্যমে ঐচ্ছিক বিষয়ে ৪০ নম্বরের বেশি পেলে তা ফলাফলে যুক্ত হয়।

এছাড়া এর আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা ফলাফলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই আমরা গত বছরের এসএসসি পরীক্ষার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছি। তখন থেকেই আমরা সতর্ক হয়েছি। বিরোধী দল এখনো আছে, তারা আগের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি, যাতে যে কোনো পরিস্থিতি তারা মোকাবেলা করতে পারে। আমরা তাদের মধ্যে সাহস সৃষ্টির চেষ্টা করেছি।

ক্যাডেট কলেজগুলো এবার মেধাতালিকার নিচে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমাদের দেশে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভালো পড়াশোনা হয়। সবাই সেখানে ভর্তির চেষ্টা করে। আমরা সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নত করতে চাই। এ জন্য আমাদের নানা উদ্যোগও রয়েছে।

তিনি বলেন, এ পর্যায়ে এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের মেধা প্রায় সমান। প্রয়োজন সুযোগের। আমরা সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। এ জন্য অনেকেই এগিয়ে আসছে।

প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কারণে ফল ভালো হলো কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠলে আমরা তদন্ত কমিটি করি। যথাযথভাবে তদন্তের পর প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাজেশন্স মিলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে আমরা ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবো।

বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সম্পদ কম, ব্যয়ও বাড়ছে। ভবিষ্যতে আর্থিক সঙ্গতি বাড়লে বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা হবে। তবে ইতোমধ্যে গঠিত প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ট্রাস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহায়তার সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৪ নভেম্বর পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও বিরোধী দলের কর্মসূচির কারণে তা শুরু হয় ৭ নভেম্বর। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ১১ দিনের মধ্যে ৬ দিনের জেএসসিতে ৯টি এবং জেডিসিতে ৮টি মোট ১৭টি পত্রের পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করতে হয়েছে।

নাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভীতিকর, অমানবিক ও প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তাদের স্বাভাবিক লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্র হতে উত্তরপত্রসহ পরীক্ষার গোপনীয় কাগজপত্র বোর্ডে আনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল সঠিক সময়ে প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বোর্ডগুলো পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের মধ্যে প্রতি শুক্রবার এবং রাতে উত্তরপত্র বিতরণ করে।

বর্তমান শিক্ষানীতির আলোকে প্রণীত সিলেবাস অনুযায়ী এ বছর প্রথমবারের মতো শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং চারু ও কারুকলা বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/নূরুল//ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩)