দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অনেক কষ্ট, বাধা ও ত্যাগ স্বীকার করে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার নির্দেশে মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে এসেছিলেন দলের অনেক নেতা-কর্মী-সমর্থক। কিন্তু সরকার ও পুলিশের বাধায় কমর্সূচি সফল না হওয়ায় এসব নেতাকর্মী হতাশ হয়েছেন।

তারা দুঃখ করে বলেছেন, সরকারি দলের ক্যাডারদের বাধা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শরিক হতে ঢাকা এসেছিলাম। রাজধানীর পথে রওনা দেওয়ার পর থেকেই আমাদের পিছু নিয়েছিল র‌্যব-পুলিশের গ্রেফতার আতংক, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে মার খাওয়ার ভয়। আমরা এসবের কোনো তোয়াক্কা না করে ম্যাডামের আহ্বানে ঢাকা এসেছিলাম। আশা ছিল এতদিন ঢাকার বড় বড় নেতারা যাই করে থাকুন না কেন, এবার হয়তো তারা আর সরকারকে ছাড় দেবেন না। নিজেদের পূর্ণ শক্তি নিয়ে অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কিন্তু আমাদের আশা পূরণ হয়নি।

অনেক ক্ষুব্ধ নেতাকর্মী বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসলেও ঢাকার নেতাকর্মীরা কর্মসূচি সফল করতে কোনো উদ্যোগই নেয়নি। ঢাকার নেতাকর্মীরা যদি সম্মিলিতভাবে রাজপথে বের হয়ে আসতেন, তাহলে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশ বাধা দিয়ে রাখতে পারতো না।

যশোর জেলা শিক্ষক সমিতির নেতা সোহেল আহসান দ্য রিপোর্টকে বলেন, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে যোগ দিতে ম্যাডামের আহ্বানে ঢাকা এসেছি। আসার পথে আমাকে ১১ বার বাস বদল করতে হয়েছে। সঙ্গে ছিল জীবনের ঝুঁকি। পথে বারবার পুলিশের তল্লাশির সম্মুখীন হয়েছি। বিভিন্নভাবে তাদের মোকাবেলা করে ঢাকায় আসতে পেরেছি। আশা ছিল ম্যাডামের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য শুনব। সরকার পতনের কোনো ইঙ্গিত পাব। কিন্তু সরকার ম্যাডামকে আগে থেকেই অবরুদ্ধ করে রাখল। অথচ দুঃখের বিষয় ঢাকার লাখ লাখ নেতাকর্মী থাকতেও বিএনপি এই অবরোধ ভাঙতে পারল না।

নারী নেত্রী কলিও যশোরের এক স্কুলের শিক্ষক ও মহিলা দল নেত্রী। তিনি জানান, অনেক কষ্টে দুদিন আগে ম্যাডামের আহ্বানে ঢাকা এসেছি। গত দুদিন ছিলাম সাভারে বোনের বাসায়। আজ সকালেই সরকারি অবরোধের মধ্যে অনেক কষ্টে সেখান থেকে ঢাকায় এসে তোপখানা রোডে আশ্রয় নিয়েছি। সারাক্ষণ গ্রেফতারের ভয় ছিল। সঙ্গে কোনো ভ্যানেটি ব্যাগও আনিনি। শুধু কিছু টাকা ও মোবাইল ছাড়া।

কলি আরো বলেন, ম্যাডামকে অবরুদ্ধ করে রাখার পরও ঢাকার নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া না দেখে কষ্ট পেলাম।

জাতীয় স্টেডিয়ামের পাশে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন, দিনাজপুর থেকে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় অংশ নিতে আসা মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি কাকে যেন বলছিলেন, অনেক দুর্ভোগ সয়ে ঢাকা এসেছিলাম। কিন্তু সরকারের বাধায় ম্যাডাম বের হতে না পারায় মনের মধ্যে কষ্টই থেকে গেল।

টাঙ্গাইল জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বপন বলেন, হামলা ও গ্রেফতারের ভয় নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মোটরসাইকেল যোগে সকালেই টঙ্গীর কাছে এসে পৌঁছেছিলাম। আশা ছিল, ম্যাডাম যথাসময়ে বের হলেই যেকোনো মূল্যে নয়াপল্টন পৌঁছাবো। কিন্তু ম্যাডাম যেতে না পারায় মনের দুঃখে সন্ধ্যার দিকে চলে এসেছি।

দ্য রিপোর্ট/টিএস/রাসেল/ডিসেম্বর২৯,২০১৩।