এ যেন ঢাকা নয় !
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শুনশান নীরবতা। হঠাৎ করে একটা-দু’টা গাড়ি। মানুষের সমাগমও নেই। মনে হচ্ছে এ যেন ঢাকা নয়। চির চেনা এই শহর আজ যে বড় অচেনা!
এরই মাঝে দু’-একজন মানুষ যাও বা চলছে তাও আবার তাদের সঙ্গী ‘নানা ভোগান্তি’।
‘কিছু দূরে পর পর পুলিশের চেকপোস্ট। ভয়ে অনেকেই সন্ধ্যার আগেই যার যার গন্তব্যে চলে গেছেন। আর আমরা যারা যেতে পারি নি তাদের হতে হচ্ছে নাজেহাল।’ -দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদকের কাছে এমনই মন্তব্য করলেন এক পথচারী। আরও কয়েকজন সম্মতি দিলেন তার কথায়।
অনেকে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে। আবার দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাবেন বলে অনেকের রেলস্টেশনে আসা। কিন্তু বিধি বাম। কীভাবে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাবেন? ট্রেনের দেখা নেই। কখন বা কবে চলবে, তা কেউই বলতে পারছেন না।
রেলস্টেশনের এক কর্মকর্তা বললেন, ‘কখন বা কবে থেকে ট্রেন চলবে তা বলা যাচ্ছে না।’
স্টেশনে অবস্থানরত কিছু যাত্রীকে নিরাপত্তার অজুহাতে রবিবার সাড়ে সাতটার দিকে প্লাটফর্ম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল। ফাঁকা করা হল প্লাটফর্ম। এ সব যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করে বললেন, ‘এটা হতে পারে না। আমাদের কী অপরাধ?’
রবিবার দুপুর ১২ থেকে রাত ৮টা। আব্দুল আলীসহ ২০ জন শ্রমজীবী মানুষ অপেক্ষা করছেন। তাঁরা যাবেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ। মাটি কাটার কাজে এসেছিলেন তাঁরা। কাজ শেষে বাড়িতে যেতেই স্টেশনে এসেছিলেন। কিন্তু স্টেশনে আসার পর জানতে পারলেন ট্রেন চলবে না। এর কিছুক্ষণ পরই তাদেরকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।
মো. শাহাদাত হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী। কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসার পথে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেন থেকে দুপুর ১২টায় আখাউড়া রেলস্টেশনে সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে সিএনজি দিয়ে ভৈরব, ভৈরব থেকে নরসিংদী, নরসিংদী থেকে টঙ্গী ও সব শেষে তার গন্তব্য গাজীপুর। এতে তার খরচ হয়েছে ৫ শ’ টাকা। অথচ কোনো কাজ মেলেনি। এখন বাড়িতে ফিরতে কষ্ট করে কমলাপুর স্টেশনে এসেছিলেন। তার হাতে কোনো টাকা নেই। তার বক্তব্য, ‘এ অবস্থা চলতে পারে না।’
পথে হয়রানির শিকার এক পথচারী ষাটোর্ধ্ব আব্দুল মজিদ দ্য রিপোর্টের এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ক্ষমতার লড়াই করছেন নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু আমাদের মতো গরিব মানুষদের জীবন এতে বিপন্ন।’
শুধু কমলাপুর রেল স্টেশন নয়, সারা শহরেই যেন একই চিত্র।
(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এমএইচও/আইজেকে/ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩)