শেফালী ঘোষ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ ২০০৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। জীবদ্দশায় পেয়েছিলেন ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা। তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে।
শেফালী ঘোষ ১৯৪১ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগো পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
১৯৬০ সালে গান শেখার জন্য তিনি চট্টগ্রাম আসেন। অল্প সময়ের মধ্যে শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক আশরাফুজ্জামান শেফালী ঘোষ এবং আঞ্চলিক গানের সম্রাট শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবকে ডেকে পাঠালেন। প্রস্তাব দিলেন আঞ্চলিক ভাষায় গান গাইতে। দুজনই রাজি হলেন। শেফালী ঘোষ আর শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের দ্বৈতগান খুবই জনপ্রিয়তা পেল। এরপর থেকে দুটি নাম একই সঙ্গে উচ্চারিত হতো।
শেফালী ঘোষ মুক্তিযুদ্ধের সময় গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তার দুই হাজারেরও বেশী গান রয়েছে। তার গানের অ্যালবামের সংখ্যা প্রায় ১৫০। এছাড়া তিনি ২০টি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘শঙ্খনদীর মাঝি আঁই তোয়ার লগে রাজি’, ‘আঁধার ঘরত রাত হাডাইয়ুম হারে লই’, ‘সূর্য উডের অভাই লাল মারি’, ‘নাতিন বরই খা’, ‘ও বানু বানুরে’, ‘ভাঙা গাছর নয়া টেইল’, ‘ওরে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দেওয়ানা’ ও ‘পালে কী রং লাগাইলিরে মাঝি’।
শেফালী ঘোষ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। লাভ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক পদক (১৯৯০), বাংলা একাডেমির আজীবন সম্মাননা (২০০২), শিল্পকলা একাডেমি পদক (২০০৩) ও একুশে পদকে (২০০৬, মরণোত্তর)।
সংগীতানুরাগী ননী গোপাল দত্তের সঙ্গে ষাটের দশকে তার বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে।
(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/জেএম/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩)